ডেনিস কম্পটন

ইংরেজ ক্রিকেটার

ডেনিস চার্লস স্কট কম্পটন, সিবিই (ইংরেজি: Denis Compton; জন্ম: ২৩ মে, ১৯১৮ - মৃত্যু: ২৩ এপ্রিল, ১৯৯৭) মিডলসেক্সের হেন্ডনে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের পক্ষ হয়ে ৭৮ টেস্ট খেলেছেন। ঘরোয়া কাউন্টি ক্রিকেটে পুরোটা সময় মিডলসেক্সে ব্যয় করেছেন ডেনিস কম্পটন। দলে তিনি ডানহাতে ব্যাটিং ও বামহাতে স্লো লেফট-আর্ম চায়নাম্যান বোলিং করতেন। কম্পটনকে ইংল্যান্ডের সর্বাপেক্ষা উজ্জ্বল ব্যাটসম্যানের মর্যাদা দেয়া হয়েছে।[১] পাশাপাশি তিনি আর্সেনাল ফুটবল ক্লাবের হয়ে ফুটবল খেলতেন।

ডেনিস কম্পটন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ডেনিস চার্লস স্কট কম্পটন
জন্ম(১৯১৮-০৫-২৩)২৩ মে ১৯১৮
হেন্ডন, মিডলসেক্স, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২৩ এপ্রিল ১৯৯৭(1997-04-23) (বয়স ৭৮)
উইন্ডসর, বার্কশায়ার, ইংল্যান্ড
উচ্চতা৫ ফুট ১০ ইঞ্চি (১.৭৮ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট-আর্ম চাইনাম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৯৭)
১৪ আগস্ট ১৯৩৭ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট৫ মার্চ ১৯৫৭ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৩৬-১৯৬৪এমসিসি
১৯৩৬-১৯৫৮মিডলসেক্স
১৯৪৪/৪৫-১৯৪৫/৪৬ইউরোপিয়ান্স (ইন্ডিয়া)
১৯৪৪/৪৫হল্কার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতাটেস্টএফসি
ম্যাচ সংখ্যা৭৮৫১৫
রানের সংখ্যা৫৮০৭৩৮৯৪২
ব্যাটিং গড়৫০.০৬৫১.৮৫
১০০/৫০১৭/২৮১২৩/১৮৩
সর্বোচ্চ রান২৭৮৩০০
বল করেছে২৭১০৩৬৬৪০
উইকেট২৫৬২২
বোলিং গড়৫৬.৪০৩২.২৭
ইনিংসে ৫ উইকেট১৯
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং৫/৭০৭/৩৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং৪৯/–৪১৬/–
উৎস: ক্রিকইনফো, ১৮ জুলাই ২০১৭

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

হ্যারিজেসি কম্পটন দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন ডেনিস। লেস কম্পটন তার বড় ভাই। লেসলিও মিডলসেক্সের পক্ষে ক্রিকেট এবং আর্সেনাল ও ইংল্যান্ডের পক্ষে ফুটবল খেলেছেন। বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষাগ্রহণ শেষে ১৯৩৪ সালে লর্ডসের এমসিসিতে গ্রাউন্ড স্টাফ হিসেবে যোগ দেন।

কম্পটন তিনবার বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রথম স্ত্রী ডরিস রিচ ছিলেন নর্তকীব্রায়ান নামে সন্তান রয়েছে।[২] দ্বিতীয় স্ত্রী ভ্যালেরি প্লাটের গর্ভে প্যাট্রিকরিচার্ড - দুই সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। উভয়েই নাটালের পক্ষে খেলেছেন।[২] রিচার্ডের সন্তান নিক কম্পটন ২০১২-১৩ মৌসুমে সফরকারী ইংল্যান্ডের হয়ে ভারতের বিপক্ষে আহমেদাবাদে টেস্ট অভিষেক ঘটে।[৩] কম্পটনের তৃতীয় স্ত্রী ক্রিস্টিন ফ্রাঙ্কলিন টোবিয়াসকে বিয়ে করেন ১৯৭৫ সালে। এ সংসারে শার্লতভিক্টোরিয়া নাম্নী দুই কন্যা রয়েছে।[২]

খেলোয়াড়ী জীবন সম্পাদনা

১৯৩৬ সাল থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।[৪][৫] এ সময়ে তিনি এমসিসি দলের সদস্যরূপে ১৯৪৬-৪৭, ১৯৫০-৫১ ও ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড; ১৯৪৮-৪৯ ও ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ১৯৫৩-৫৪ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করেন।

১৯৩০-এর দশকের শেষদিকে ইংল্যান্ডের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ব্যাটসম্যান ছিলেন। পরবর্তী প্রায় বিশ বছর এ ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখেন তিনি। ব্যাটিংয়ের বিশেষ ভঙ্গীমার দরুন ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছেন। ১৯৩৮ সালে ডন ব্র্যাডম্যানের সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে মাত্র ১৯ বছর বয়সে প্রথম সেঞ্চুরি করেন। একই সিরিজে লর্ডসে অপরাজিত ৭৬* রান করে দলকে আসন্ন পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা করেন। এ ইনিংসটি বৃষ্টিতে আক্রান্ত পীচে করেছিলেন যা ব্র্যাডম্যানের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ান। ১৯৩৯ সালে এক মৌসুমে ২,৪৬৮ রান করেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য দিক ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ১২০ রান।

কীর্তিগাঁথা সম্পাদনা

১৯৩৯ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন।[৬] পরবর্তীতে ২০১৩ সালে তার নাতি নিক কম্পটনও এই পুরস্কারের অধিকারী হন।

বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে মাত্র সতের জন ক্রিকেটারের একজন হিসেবে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে শতাধিক সেঞ্চুরি করার গৌরবগাঁথা রচনা করেন। ২০০৯ সালে রিচি বেনো, গ্রাহাম গুচ, ফ্রাঙ্ক ওলি, হ্যারল্ড লারউডের সাথে তাকেও আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমে মরণোত্তর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৭] হার্টফোর্ডশায়ারের শেনলি ক্রিকেট সেন্টারে অবস্থিত প্রধান ক্রিকেট মাঠটি ১৯৯৩ সালে উদ্বোধন করেন ও তার সম্মানে প্রধান মাঠটি ডেনিস কম্পটন ওভাল নামে পরিচিতি পায়। এছাড়াও, লর্ড’স ক্রিকেট গ্রাউন্ডের একটি স্ট্যান্ডের নামকরণ করা হয়।

২০০৫ সালে ইসিবিক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে অ্যাশেজ সিরিজের জন্য নির্ধারিত সিরিজের সেরা খেলোয়াড়ের পরিবর্তে কম্পটন-মিলার পদক নির্ধারণ করে। বিখ্যাত সাবেক অস্ট্রেলীয় অল-রাউন্ডার কিথ মিলারের সাথে তার বন্ধুত্ব এবং প্রতিপক্ষের ভূমিকাকে মর্যাদা দিতেই এ নামকরণ করা হয়েছে।[৮]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Player Profile: Denis Compton" (ইংরেজি ভাষায়)। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১২ 
  2. "OBITUARY: Denis Compton" (ইংরেজি ভাষায়)। Telegraph। ২৪ এপ্রিল ১৯৯৭। ১ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০১৩ 
  3. "Nick Compton" (ইংরেজি ভাষায়)। Cricinfo। 
  4. ACS (১৯৮২)। A Guide to First-Class Cricket Matches Played in the British Isles। Nottingham: ACS। 
  5. "Marylebone Cricket Club Players"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৭ 
  6. "Wisden Cricketers of the Year" (ইংরেজি ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-২১ 
  7. "Benaud, Gooch, Compton, Larwood and Woolley inducted into Cricket Hall of Fame" (ইংরেজি ভাষায়)। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০১৩ 
  8. "The Compton-Miller medal is born" (ইংরেজি ভাষায়)। Channel 4। ২০ জুলাই ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০০৭ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
ওয়াল্টার রবিন্স
মিডলসেক্স কাউন্টি ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৫১-১৯৫২
(বিল এডরিচের সাথে যৌথভাবে)
উত্তরসূরী
বিল এডরিচ
🔥 Top keywords: আনোয়ারুল আজীমপ্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানইব্রাহিম রাইসিঝিনাইদহ-৪বুদ্ধ পূর্ণিমাকাজী নজরুল ইসলামরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরআলী খামেনেয়ীশিয়া ইসলামরামমোহন রায়গৌতম বুদ্ধশেখ মুজিবুর রহমানবাংলাদেশবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধবিশ্ব দিবস তালিকাএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)ইরানশায়খ আহমাদুল্লাহ২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪বাংলা ভাষা আন্দোলনপহেলা বৈশাখনৃসিংহবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহআবহাওয়াইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকা২২ মেমুহাম্মাদমৌলিক পদার্থের তালিকামহাত্মা গান্ধীভূমি পরিমাপবাংলা ভাষাসাতই মার্চের ভাষণপদ্মা সেতুঘূর্ণিঝড়