ওয়াল্টার রবিন্স

ইংরেজ ক্রিকেটার

রবার্ট ওয়াল্টার ভিভিয়ান রবিন্স (ইংরেজি: Walter Robins; জন্ম: ৩ জুন, ১৯০৬ - মৃত্যু: ১২ ডিসেম্বর, ১৯৬৮) স্টাফোর্ডে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারফুটবলার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্স,[১] কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে অংশগ্রহণ করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার ছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি কার্যকরী লেগ ব্রেক বোলিংশৈলী প্রদর্শন করতেন ওয়াল্টার রবিন্স

ওয়াল্টার রবিন্স
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম(১৯০৬-০৬-০৩)৩ জুন ১৯০৬
স্টাফোর্ড, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১২ ডিসেম্বর ১৯৬৮(1968-12-12) (বয়স ৬২)
মেরিলেবোন, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনলেগ ব্রেক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতাটেস্টএফসি
ম্যাচ সংখ্যা১৯৩৭৯
রানের সংখ্যা৬১২১৩৮৮৪
ব্যাটিং গড়২৬.৬০২৬.৩৯
১০০/৫০১/৪১১/৭৩
সর্বোচ্চ রান১০৮১৪০
বল করেছে৩৩১৮৪৩২১৫
উইকেট৬৪৯৬৯
বোলিং গড়২৭.৪৬২৩.৩০
ইনিংসে ৫ উইকেট৫৪
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং৬/৩২৮/৬৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং১২/০২১৭/০
উৎস: ক্রিকইনফো, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

প্রারম্ভিক জীবন

সম্পাদনা

স্টাফোর্ডে জন্মগ্রহণকারী ওয়াল্টার রবিন্স হাইগেট স্কুল ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়ন করেন। হাইগেট স্কুলে অধ্যয়নকালীন চার বছরের মধ্যে তিন বছরই প্রথম একাদশের ব্যাটিংবোলিং গড়ে শীর্ষস্থানে আরোহণ করেন। শেষ বছরে ১৯২৫ সালে অধিনায়কের দায়িত্ব পান। আল্ডেনহামের বিপক্ষে ২০৪ রানসহ ৭/৫৪ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। ঐ মৌসুমে ৬২.৭৬ গড়ে ৮১৬ রান ও ১৫.১৮ গড়ে ৬০ উইকেট তুলে নেন তিনি। এছাড়াও, হাইগেট ফুটবল একাদশের পক্ষে অধিনায়কত্ব করেছেন। নটিংহাম ফরেস্টের পক্ষে ফুটবল খেলেছেন।

খেলোয়াড়ী জীবন

সম্পাদনা

১৯২৫ সালে বিদ্যালয় অধ্যয়নকালীন মিডলসেক্সের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন। এই দলে তিনি ১৯৫০ সাল পর্যন্ত দলে অনিয়মিতভাবে খেলেছেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বমোট ১৩,৪৯০ রান তুলেছেন ২৬.৪৫ গড়ে এবং ২৩.৫৯ গড়ে ৯৪৬ উইকেট পান।প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্স, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলেছেন তিনি। ডানহাতে কার্যকারী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন ও লেগ ব্রেক বোলিংয়ে সক্ষমতা দেখাতে পারতেন। কাউন্টি দলের পক্ষে ২৫৮টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ২২.২৮ গড়ে ৬৬৯ উইকেট তুলে নেন। তন্মধ্যে, ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করিয়েছেন ৮/৬৯। ঝুঁকিগ্রহণকারী অধিনায়ক হিসেবে তার সবিশেষ পরিচিতি ছিল। খেলায় ইপ্সিত ফলাফল আনয়ণে এ ঝুঁকিগ্রহণ করতেন তিনি। ১৯৩৫-১৯৩৮, ১৯৪৬-৪৭ ও ১৯৫০ - এ তিন ধাঁপে মিডলসেক্সের পক্ষে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৭ সালের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ে নেতৃত্ব দেন।

২৯ জুন, ১৯২৯ তারিখে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রবিন্সের টেস্ট অভিষেক হয়। ১৪ আগস্ট, ১৯৩৭ তারিখে ওভালে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। ১৯২৫ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত তার খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। তিনি তার সময়কালে ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা গতিশীল অল-রাউন্ডার ছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ২১৭ ও টেস্ট খেলায় ১২ ক্যাচ তালুবন্দী করেছেন তিনি।

অস্ট্রেলিয়া সফর

সম্পাদনা

১৯৩৬-৩৭ মৌসুমে অ্যাশেজ সফরের তৃতীয় টেস্টে ডন ব্র্যাডম্যানের ক্যাচ ফেলে দেয়ার ন্যায় ঘটনাও তার হাত দিয়েই হয়েছিল। অধিনায়ক গাবি অ্যালেন রবিন্সকে স্কয়ার লেগ অঞ্চলে নিয়ে আসেন যাতে ফাস্ট বোলার ব্রাউন্সার দেয়ার পূর্বেই লং লেগ অঞ্চলে দৌঁড়ে যাওয়া যায়। ব্র্যাডম্যান আনন্দচিত্তে হুক মারলে রবিন্স দৌঁড়ে গিয়ে বল মাটি স্পর্শ করার পূর্বেই হাতে নেয়ার চেষ্টা চালালেও ব্যর্থ হন। অ্যালেনের কাছে দুঃখপ্রকাশ করলে প্রত্যুত্তরে তিনি বলেন, ‘ওয়াল্টার, তোমার কাছে এটি আশা করিনি। সম্ভবতঃ তুমি আমাদেরকে অ্যাশেজ রাখতে দিবে না। তবে এ নিয়ে কোন চিন্তা করো না। খেলায় ব্র্যাডম্যান ২৭০ রান তুলেছিলেন।’ ৩৬৫ রানে জয় পেয়ে অস্ট্রেলিয়া ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে।

রবিন্স ইংল্যান্ড দলের পক্ষে তিনটি সিরিজে অধিনায়কত্ব করেন। ১৯৩৭ সালে নিজ দেশে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করেছিল ইংল্যান্ড দল।

১৯৩০ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন তিনি।[২] ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতার প্রেক্ষিতে ১৯৪৮ সালে অধিনায়ক থেকে চলে আসেন ও ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। তাস্বত্ত্বেও ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত মাঝে-মধ্যে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিতেন ওয়াল্টার রবিন্স।

অবসর পরবর্তীকালে ইংল্যান্ডের টেস্ট দল নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। অতঃপর ৬২ বছর বয়সে ১২ ডিসেম্বর, ১৯৬৮ তারিখে লন্ডনের লর্ডমের কাছাকাছি সেন্ট জোন্স উড এলাকায় নিজ গৃহে তার দেহাবসান ঘটে। চার্লস রবিন্স নামীয় পুত্র প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটার ছিলেন। তার জামাতা কেনেথ কেম ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে ক্যারিয়ার অফিসার ছিলেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Middlesex players". CricketArchive. Retrieved 28 May, 2017.
  2. "Wisden Cricketers of the Year"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-২১ 

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
জি.ও.বি. অ্যালেন
ইংরেজ ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৩৭
উত্তরসূরী
ডব্লিউ.আর. হ্যামন্ড
পূর্বসূরী
এইচ.জে.এনথোভেন
এন.ই. হেইগ
মিডলসেক্স ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৩৫-১৯৩৮
উত্তরসূরী
আই.এ.আর. পিবলস
পূর্বসূরী
আই.এ.আর. পিবলস
মিডলসেক্স ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৪৬-১৯৪৭
উত্তরসূরী
এফ.জি. মান
পূর্বসূরী
এফ.জি. মান
মিডলসেক্স ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৫০
উত্তরসূরী
ডি.সি.এস. কম্পটন
ডব্লিউ.জে. এডরিচ
🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধান২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপঈদুল আযহাআরাফাতের দিনরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকুরবানীকোকা-কোলাক্লিওপেট্রাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানি২০২৪ কোপা আমেরিকাবাংলাদেশএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)তালবিয়াউয়েফা ইউরো ২০২৪সেন্ট মার্টিন দ্বীপআর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলহজ্জতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)মিয়া খলিফাফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংকাজী নজরুল ইসলামবিদায় হজ্জের ভাষণআবহাওয়াগুয়াতেমালা জাতীয় ফুটবল দলইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)চন্দ্রবোড়াবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামোবাইল ফোনসুনেত্রাউয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপবাংলা ভাষাউইকিপিডিয়া:বৃত্তান্তওয়াকার-উজ-জামানভারতআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপআসসালামু আলাইকুমশাকিব খান