রোমিলা থাপর

ভারতীয় ইতিহাসবেত্তা
(Romila Thapar থেকে পুনর্নির্দেশিত)

রোমিলা থাপর (জন্ম ৩০শে নভেম্বর ১৯৩১) একজন ভারতীয় ইতিহাসবিদ হওয়ার সঙ্গে একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। তাঁর অধ্যয়নের মূল ক্ষেত্র প্রাচীন ভারত। তিনি অনেকগুলি বই লিখেছেন, তারমধ্যে একটি জনপ্রিয় বই হল এ হিস্টরি অফ ইন্ডিয়া। তিনি বর্তমানে নতুন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ইমেরিটাস অধ্যাপক (যিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এবং "সর্বশেষ কার্যভারের পদমর্যাদার সম্মানসূচক খেতাব ধরে রাখার অনুমতি পেয়েছেন)। পদ্মভূষণ পুরস্কারের জন্য তার নাম দুবার প্রস্তাব করা হলেও তিনি দু-বারই তা অস্বীকার করেছেন। তবে মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞানে আজীবন কৃতিত্বের জন্য ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের ক্লুজ পুরস্কার ভূষিত হয়েছেন।[১]

রোমিলা থাপর
জন্ম (1931-11-30) ৩০ নভেম্বর ১৯৩১ (বয়স ৯২)
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তনপাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়
ওরিয়েন্টাল এবং আফ্রিকান স্টাডিজ স্কুল, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাঐতিহাসিক, লেখক
পরিচিতির কারণভারতীয় ইতিহাস সম্পর্কে বই লিখেছেন
পুরস্কারক্লুজ পুরস্কার (২০০৮)

প্রাথমিক জীবন, পরিবার এবং শিক্ষা

সম্পাদনা

রোমিলা - সেনা চিকিৎসক দয়ারাম থাপারের কন্যা। মায়ের নাম কৌশল্যা। তিনি ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর চিকিৎসা পরিষেবার মহাপরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। প্রয়াত সাংবাদিক রমেশ থাপার ছিলেন তাঁর সহোদর ভাই এবং করণ থাপার তাঁর সম্পর্কিত ভাই।[২] ছোটবেলায় তাঁর বাবাকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের সামরিক কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করতে হয়েছিল, তাই তিনি ভারতের বিভিন্ন শহরের বিদ্যালয়গুলিতে বিভিন্ন পড়াশোনা করেছেন। পরে তিনি পুনের ওয়াদিয়া কলেজের ইন্টারমিডিয়েট অব আর্টসে পড়েন। পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক হবার পরে, থাপার দ্বিতীয়বার সাম্মানিক স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন ভারতীয় ইতিহাসে। এরপর তিনি ১৯৫৮ সালে স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল এবং আফ্রিকান স্টাডিজ, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ. এল. বাশামের অধীনে ভারতীয় ইতিহাসে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। [৩]

কার্যাবলী

সম্পাদনা

তিনি ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৬২ সালের মধ্যে কুরুক্ষেত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসে রীডার ছিলেন এবং ১৯৬৩ থেকে ১৯৭০ সাল অবধি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই একই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। পরে, তিনি নতুন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসের অধ্যাপক হিসাবে কাজ করেছিলেন, যেখানে তিনি এখন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক।[৪]

থাপারের প্রকাশিত প্রধান কাজগুলি হল অশোক এবং মৌর্যসাম্রাজ্যের পতন, প্রাচীন ভারতীয় সামাজিক ইতিহাস: কিছু ব্যাখ্যা, আদি ভারতীয় ইতিহাসের সাম্প্রতিক দৃষ্টিভঙ্গি (সম্পাদক), ভারতের ইতিহাস প্রথম খণ্ড এবং আদি ভারত: আদি থেকে ১৩০০ খ্রিস্টাব্দ

তাঁর ঐতিহাসিক রচনাটি হিন্দুধর্মের উৎসকে সামাজিক শক্তিসমূহের মধ্যে বিকশিত পারস্পরিক ক্রিয়া হিসাবে চিত্রিত করেছে।[৫] সোমনাথ মন্দির সম্পর্কে তাঁর সাম্প্রতিক কাজটি, কিংবদন্তি গুজরাতের এই মন্দিরটি সম্পর্কে ইতিহাস-রচনার বিবর্তন পরীক্ষা করে।[৬]

তাঁর প্রথম লেখা, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অশোক এবং মৌর্যসাম্রাজ্যের পতন ১৯৬১ সালে প্রকাশিত হয়। থাপার অশোকের ধম্ম নীতিটি, বিভিন্ন জাতি ও ভিন্ন সংস্কৃতির একটি সাম্রাজ্য একত্র রাখার উদ্দেশ্যে, একটি অসাম্প্রদায়িক নাগরিক নীতি হিসাবে সংস্থাপিত বলে মনে করেছেন। তিনি মনে করেছেন মৌর্য্য সাম্রাজ্যের পতনের জন্য তার কেন্দ্রীয়ভাবে প্রশাসন দায়ী। এর জন্য ব্যতিক্রমী দক্ষতার শাসকদের ভালভাবে কাজ করার দরকার ছিল।

থাপারের ভারতের ইতিহাস এর প্রথম খণ্ডটি পাঠকদের জনপ্রিয়তার কথা ভেবে রচিত এবং এটি পূর্ববর্তী ইতিহাস থেকে শুরু করে ষোড়শ শতাব্দীতে ইউরোপীয়দের আগমন পর্যন্ত দেখিয়েছে।

প্রাচীন ভারতীয় সামাজিক ইতিহাস এটি প্রথম দিকের ইতিহাস থেকে শুরু করে প্রথম সহস্রাব্দের শেষের সময়কাল নিয়ে একটি কাজ, এটিতে হিন্দু ও বৌদ্ধ আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার তুলনামূলক অধ্যয়ন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, এবং বর্ণবাদ পদ্ধতিতে সামাজিক প্রতিবাদ এবং সামাজিক গতিশীলতায় বৌদ্ধধর্মের ভূমিকা পরীক্ষা করে। বংশ থেকে রাজ্য বইতে খ্রিস্টপূর্ব প্রথম সহস্রাব্দে মধ্য গাঙ্গেয় উপত্যকায় রাজ্য গঠনের বিশ্লেষণ করা হয়েছে, লোহার ব্যবহার এবং কৃষিতে লাঙ্গলের ব্যবহার আসার ফলে যে পরিবর্তন, যাজকবাদী এবং গতিময় বংশ ভিত্তিক সমাজ থেকে শুরু করে বসতি করে কৃষকের জমি নেওয়া, পুঁজিভবন এবং বর্ধিত নগরায়ন এই প্রক্রিয়াগুলির সন্ধান করা হয়েছে।[৭]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী