২০১৫-এর নেপাল ভূমিকম্প

২৫ এপ্রিল ২০১৫ সালে সংঘটিত এক বিধ্বংসী ভূমিকম্প

২০১৫-এর নেপাল ভূমিকম্প (এছাড়াও হিমালয়ান ভূমিকম্প হিসাবে উল্লেখিত)[৮][৯] ৭.৮ বা ৮.১ মাত্রার একটি ভূমিকম্প যা শনিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০১৫ সালে ১১:৫৬ এনএসটি (৬:১২:২৬ ইউটিসি) সময়ে নেপালের লামজংয়ের পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্ব কেন্দ্রস্থল থেকে আনুমানিক ২৯ কিমি (১৮ মা) ব্যাপী এলাকায় ভূপৃষ্ঠের প্রায় ১৫ কিমি (৯.৩ মা) গভীরে সংগঠিত হয়।[১]

২০১৫-এর নেপাল ভূমিকম্প
২০১৫-এর নেপাল ভূমিকম্প নেপাল-এ অবস্থিত
কাঠমান্ডু
কাঠমান্ডু
২০১৫-এর নেপাল ভূমিকম্প
ইউটিসি সময়??
তারিখ *২৫ এপ্রিল ২০১৫ (2015-04-25)
[[Category:EQ articles using 'date' or 'time'
(deprecated)]]
মূল সময় *১১:৫৬:২৬ এনএসটি[১]
[[Category:EQ articles using 'origintime'
(deprecated)]]
মাত্রা৭.৮ Mw,[১]
গভীরতা১৫.০ কিলোমিটার (৯ মা)[১]
ভূকম্পন বিন্দু২৮°০৮′৪৯″ উত্তর ৮৪°৩৮′৫৬″ পূর্ব / ২৮.১৪৭° উত্তর ৮৪.৬৪৯° পূর্ব / 28.147; 84.649[১]
ধরনধাক্কা[১]
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা
মোট ক্ষয়ক্ষতি$৩–৩.৫ বিলিয়ন সরাসরি লোকসান[২]
সর্বোচ্চ তীব্রতাIX MM (সহিংস)[১]
আঘাতপরবর্তী৬.৭ Mw, এপ্রিল ২৫, ০৬:৪৫ (ইউটিসি)[৩]
৬.৭ Mw, এপ্রিল ২৬, ০৭:০৯ (ইউটিসি)[৪]
হতাহত৭,৭৪৯ জন মৃত (সরকারী ভাবে)[৫]
১৭,২০০ জন আহত (সরকারী ভাবে)[৬]
Deprecated See documentation.
২০১৫, মে; নেপাল ভূমিকম্প
ইউটিসি সময়??
তারিখ *১২ মে ২০১৫ (2015-05-12)
[[Category:EQ articles using 'date' or 'time'
(deprecated)]]
মূল সময় *১২:৩৫:০০ NST
[[Category:EQ articles using 'origintime'
(deprecated)]]
মাত্রা৭.৩[৭]
গভীরতা১৮.৫ কিমি (১১.৫ মা)
Deprecated See documentation.

১৯৩৪-এর নেপাল–বিহার ভূমিকম্পের পর এটি নেপালে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প।[১০][১১][১২] ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত নেপাল সহ ভারত, চীনবাংলাদেশে সর্বমোট ৬৫০০[১৩] জনের অধিক মানুষ নিহত হয়েছে জানা যায়।[১৪][১৫][১৬] এই ভূমিকম্পে ফলে মাউন্ট এভারেস্টে মৃত্যুসংখ্যা ২০১৪ সালের তুষারধ্বসে মৃত্যুসংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। কাঠমাণ্ডু শহরে অবস্থিত শতাব্দীপ্রাচীন ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানসমূহ ভূমিকম্পের ফলে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নেপাল জুড়ে ক্রমাগত ছোট্ট কম্পন ঘটে এবং স্থানীয় ০৭:০৯:০৮ (ইউটিসি) সময়ে আরেকটি ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্প ২৬শে এপ্রিল আঘাত হানে।[৪]

ভূমিকম্প সম্পাদনা

ভূমিকম্পে প্রভাবিত অঞ্চলের মানচিত্র
এপ্রিল ২০১৫ প্রচন্ড ভূমিকম্পের কিছু পরে এভারেস্ট বেস ট্রেকরুটে ট্রেকার ও স্থানীয় মানুষের আলাপ আলোচনা
এপ্রিল ২০১৫ র ভূমিকম্পে বিধস্ত নেপালের চৌরিখারকার বুদ্ধলজ

২৫শে এপ্রিল, ২০১৫ সালে ১১:৫৭ এনএসটি (৬:১২:২৬ ইউটিসি) সময়ে নেপালের লামজংয়ের পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্ব কেন্দ্রস্থল থেকে আনুমানিক ২৯ কিমি (১৮ মা) ব্যাপী এলাকায় ভূপৃষ্ঠের প্রায় ১৫ কিমি (৯.৩ মা) গভীরে সংগঠিত হয় এবং প্রায় ২০ সেকেন্ড ধরে চলে।[১৭] ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে প্রথমে ভূমিকম্পের তীব্রতা ৭.৫ মাত্রার মাপলেও শীঘ্রই তা পরিবর্তন করে ৭.৯ মাত্রা ও পরে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প বলে উল্লেখ করে, যদিও চায়না আর্থকোয়েক নেটওয়ার্কস সেন্টার ভূমিকম্পের তীব্রতা ৮.১ মাত্রা পরিমাপ করে। ভারতীয় ভূতত্ত্ব বিভাগের মতে, ৬:১১ ইউটিসি সময়ে কাঠমাণ্ডু থেকে ৮০ কিমি (৫০ মা) উত্তর-পশ্চিমে ৭.৯ মাত্রার একটি তীব্র ভূমিকম্প ও পরে ৬:৪৫ ইউটিসি সময়ে ভরতপুর থেকে ৫৩ কিমি (৩৩ মা) দূরে ও কাঠমাণ্ডু থেকে ৮১ কিমি (৫০ মা) উত্তর-পশ্চিমে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিমি (৬.২ মা) নিচে ৬.৬ মাত্রার অপর একটি ভূমিকম্প ঘটে। প্রথম ভূমিকম্পের পরে ৪.৫ মাত্রা ও তার অধিক মাত্রার ১০০ এর বেশি কম্পন ঘটে, যার মধ্যে ৬.৬ মাত্রার একটি কম্পন প্রথম ভূমিকম্পের কয়েক মিনিট পরে ঘটে।[১৮]

পরবর্তী অবস্থা সম্পাদনা

দেশ অনুযায়ী হতাহতের সংখ্যা
দেশমৃতআহততথ্যসূত্র
নেপাল> ৭,৬৫২
> ১৬,৩৯০[১৯][২০]
ভারত৭৮৫৬০[২১]
চীন২৫৩৮৩[২২]
বাংলাদেশ২০০[২৩]
সর্বমোট> ৭,৭৫৯> ১৭,২৬১
নেপালে বিদেশী হতাহতের সংখ্যা
দেশমৃত্যুতথ্যসূত্র
ভারত৪০[২৪]
ফ্রান্স১৩[২৫]
চীন[২৬]
জার্মানি[২৭][২৮]
ইতালি[২৯]
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র[৩০]
কানাডা[৩১]
অস্ট্রেলিয়া
ভারত
[৩২][৩৩]
ইস্তোনিয়া[৩৪]
হংকং
যুক্তরাজ্য
[৩৫][৩৬]
ইসরায়েল[৩৭]
জাপান[৩৮]
মালয়েশিয়া[৩৯]
নিউজিল্যান্ড[৪০]
স্পেন[৪১]
সর্বমোট৭৯

২৬শে এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টার সময় পর্য্যন্ত কাঠমাণ্ডু শহরে ৭৭৭ জন, ভক্তপুর শহরে ২২৪ জন এবং ললিতপুর শহরে ১৫১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। নেপালের মধ্যাঞ্চল বিকাস ক্ষেত্রে ১০১৯ জন, পশ্চিমাঞ্চল বিকাস ক্ষেত্রে ২০৯ জন, পূর্বাঞ্চল বিকাস ক্ষেত্রে ৫০ জন এবং মধ্য-পশ্চিমাঞ্চল বিকাস ক্ষেত্রে ২ জন ব্যক্তির মৃত্যুর খবর জানা যায়।[৪২]

২৭শে এপ্রিল বিকেল ৪:১৪ মিনিটে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং জানান যে, ভূমিকম্পের ফলে ভারতের বিহারে ৫৬ জন, উত্তরপ্রদেশে ১২ জন, পশ্চিমবঙ্গে ৩ জন এবং রাজস্থানে ১ জনের মৃত্যু ঘটেছে।

মাউন্ট এভারেস্টে তুষারধ্বস সম্পাদনা

ভূমিকম্পের ফলে মাউন্ট এভারেস্টে যে তুষারধ্বস ঘটে, তাতে এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে বেশ কয়েকজন পর্বতারোহীর মৃত্যু ঘটে।[৪৩][৪৪][৪৫][৪৬] ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি পর্বতারোহী দল ১৮টি মৃতদেহ এবং ৬১ জন আটকে পড়া পর্বতারোহী উদ্ধার করেছেন।[৪৭][৪৮][৪৯] গুগলের প্রকৌশলী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ড্যানিয়েল পল ফ্রেডিনবার্গ/ড্যান ফ্রেডিনবার্গ ও তার তিনজন সহকর্মী গুগল আর্থ প্রকল্পের জন্য সমীক্ষা করার সময় তুষারধ্বসে এখানে মৃত্যুবরণ করেন।[৫০][৫১][৫২] ৭০০ থেকে ১০০০ জনেরও বেশি পর্বতারোহী ভূমিকম্পের সময় মাউন্ট এভারেস্টএভারেস্ট বেস ক্যাম্পে ছিলেন বলে জানা যায়, যাদের মধ্য কমপক্ষে ৬১ জন গুরুতর ভাবে আহত হয়েছেন। পর্বতগাত্রের উচ্চ ক্যাম্পে অবস্থিত পর্বতারোহীদের সংখ্যা এখনো অজানা।[৪৫][৪৬][৫৩][৫৪][৫৫][৫৬] ২৬শে এপ্রিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার উদ্ধারকারী দল মাউন্ট এভারেস্ট পৌঁছে[৫৭] গুরুতর আহত বাইশজনকে ফেরিচে নিয়ে যায় কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার জন্য উদ্ধারকার্য্য বন্ধ রাখা হয়।[৫৮] সেই দিন অপর একটি হেলিকপ্টার এভারেস্ট ক্যাম্প-১ থেকে বেশ কয়েকজন আটকে থাকা পর্বতারোহীকে উদ্ধার করে।[৫৯]

ক্ষয়ক্ষতি সম্পাদনা

ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত অট্টালিকা

নেপালী ঐতিহাসিক পুরুষোত্তম লোচন শ্রেষ্ঠর মতে, কাঠমাণ্ডু উপত্যকা অঞ্চলে অবস্থিত ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত অধিকাংশ সৌধ ধ্বংসপাপ্ত হয়েছে এবং তা আর পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।[৬০] ভূমিকম্পের ফলে কাঠমাণ্ডু দরবার ক্ষেত্রের অট্টালিকা ও সৌধগুলি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।[১৭] ১৮৩২ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত ধরহরা মিনার ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে সেই স্থানেই প্রায় দুইশত জনের মৃত্যু ঘটে।[৬১][৬২][৬৩][৬৪] জানকী মন্দিরের উত্তরভাগ, পাটন দরবার ক্ষেত্র, মনকামনা মন্দির ইত্যাদি স্থাপত্যগুলি বহুলাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[৬৫] ভূমিকম্পে কাষ্ঠমণ্ডপ, পঞ্চতলে মন্দির, দশাবতার মন্দির, কৃষ্ণ মন্দির, শিব পার্বতী মন্দিরের দুইটি দেওয়াল ইত্যাদি মন্দির স্থাপত্যগুলি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। কুমারী মন্দির, তলেজু ভবানী, জয় বাগেশ্বরী মন্দির, পশুপতিনাথ মন্দির, স্বয়ম্ভূনাথবৌধনাথ স্তূপ, রাণী পোখরির রত্ন মন্দির আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[৬০] পাটন অঞ্চলে চার নারায়ণ মন্দির, যোগ নরেন্দ্র মল্লের মূর্তি, তলেজু মন্দির, হরিশঙ্কর ও উমা মহেশ্বর মন্দির, মছিন্দ্রনাথ মান্দির ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ত্রিপুরেশ্বর অঞ্চলে কাল্মৈচন ঘাট মন্দির সম্পূর্ণ রূপে ধূলিসাৎ হয় এবং ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দির বহুলাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[৬০] ভক্তপুর অঞ্চলে ফাঁসি দাওয়া মন্দির, চারধাম মন্দির ও সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত বৎসল দুর্গা মন্দির সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[৬০] এছাড়া গোর্খা দরবার, পালনচক ভগবতী, চুরিয়ামি, রাণী মহল, ভীমসেনস্থান, নুওয়াকোট দরবার আংশিক বা অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[৬০]

প্রতিক্রিয়া সম্পাদনা

রাষ্ট্র সম্পাদনা

  •  আলজেরিয়া —আলজেরিয়া সত্তর জন ত্রাণকর্মী, ঔষধ ও অন্যান্য সামগ্রী নেপালে প্রেরণ করে।[৬৬]
  •  অস্ট্রেলিয়া — বিদেশমন্ত্রী জুলি বিশপ দ্রুত $ ৫ মিলিয়ন অর্থমূল্যের জীবনদায়ী ত্রাণসামগ্রী নেপালে পাঠানোর কথা ঘোষণা করেন। এছাড়া তিনি অস্ট্রেলীয় বেসরকারী সংস্থাগুলিকে $ ২.৫ মিলিয়ন অর্থ, জাতিসংঘের সহযোগীদের $ ২ মিলিয়ন অর্থ এবং অস্ত্রেলিয় রেড ক্রসকে $ ০.৫ মিলিয়ন অর্থ প্রদান করার কথা ঘোষণা করেন।[৬৭] এছাড়া অস্ট্রেলিয়া থেকে দুজন ত্রাণ বিশেষজ্ঞ ও আপৎকালীন প্রতিক্রিয়া দল নেপাল পাঠানো হয়।[৬৮]
  •  বাংলাদেশ — প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিকম্পের ভয়াবহতায় দুঃখ প্রকাশ করে[৬৯] নেপালের বিপর্যয় মোকবিলায় বাংলাদেশের সহযোগিতার কথা ঘোষণা করেন। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর লকহীড সি-১৩০ বিমানে করে ১০ টন ত্রাণসামগ্রী, তাঁবু, খাদ্য, পানীয় জল, কম্বল সহ ৬টি সেনা চিকিৎসক দল ও বিদেশমন্ত্রকের প্রতিনিধিদল পাঠানো হয়। এই বিমানে নেপালে আটকে থাকা ৫০জন বাংলাদেশী নাগরিক এবং অনূর্ধ্ব ১৪ মহিলা ফুটবল দলকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়।একটি থেকে ত্রাণ ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানো হবে বলে উল্লেখ করেন।[৭০][৭১] জাতীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ একটি এয়ারবাস এ৩১০ ও একটি বোয়িং ৭৩৭ বিমানে ত্রাণয়ামগ্রী নেপালে পাঠায় ও আটকে থাকা নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনে।[৭২]
  •  ভুটান — অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী নোরবু ওয়াংচুক নেপালের জনগণের প্রতি তার সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তিনি নেপালের জনগণের সঙ্গে একাত্মতার জন্য ভুটানে বিশ্ব বৌদ্ধিক সম্পদ দিবস উদ্‌যাপন বন্ধ করে দেন।[৭৩] ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে ৬৩ সদস্যের একটি চিকিৎসক দল কাঠমাণ্ডু পৌছয়। ভুটান সরকারের পক্ষ থেকে ৬২ মিলিয়ন ঙ্গুলত্রাম পুনর্বাসনের জন্য প্রদান করা হয়।[৭৪][৭৫][৭৬][৭৭][৭৮] ভূমিকম্পে মৃতদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ভুটানের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে বলে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন।[৭৯]
  •  ব্রাজিল — ব্রাজিলের বৈদেশিক সম্পর্ক মন্ত্রক থেকে নেপাল সরকার ও জনগণের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়।[৮০]
  •  বুলগেরিয়া — রাষ্ট্রপতি রোজেন প্লেভনেলিয়েভ নেপালের জনগণের প্রতি সমবেদনা জানান।[৮১]
  •  কানাডা — প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হার্পার একটি বিবৃতিতে নেপাল ও উত্তর ভারতের জনগণের প্রতি হার্দিক সমবেদনা জানান ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। তার এই বিবৃতিতে বলা হয় যে, কানাডার আধিকারিকেরা নেপাল ও ভারতীয় কর্ত্তৃপক্ষের সাহায্যে এই অঞ্চলে অবস্থিত কানাডীয় নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করছেন এবং দরকার হলে কানাডা কি ভাবে সাহায্য করতে পারে, তা আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে স্থানীয়দের প্রয়োজন বিচার করে দেখছেন।[৮২] বৈদেশিক সম্পর্ক, বাণিজ্য ও উন্নয়ন মন্ত্রী রব নিকলসন ৫ মিলিয়ন কানাডীয় ডলার অর্থ সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন।[৮৩] ২৬শে এপ্রিল বিকেলবেলা ৩০ জন বিপর্যয় মোকাবিলা বিশেষজ্ঞ নেপালের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।[৮৪] ২৭শে এপ্রিল সরকারের পক্ষ থেকে এক মাসের জন্য নেপাল ভূমিকম্প ত্রাণ তহবিল গঠন করা হয় এবং কম্বল, খাদ্যসামগ্রী, রান্না সামগ্রী, চিকিৎসা সামগ্রী ইত্যাদি পাঠানোর অঙ্গীকার করা হয়।[৮৫]
  •  চীন — প্রিমিয়ার লি কেচিয়াং নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালাকে সমবেদনা জানান এবং সাহায্যের আশ্বাস দেন।[৮৬] চীনের রাষ্ট্রপতি জি জিনপিং নেপালের রাষ্ট্রপতি রাম বরণ যাদবকে সমবেদনা জানান এবং সাহায্যের আশ্বাস দেন।[৮৭] ২৬ এপ্রিল সকালবেলা চায়না ইন্টারন্যাশনাল সার্চ অ্যান্ড রেসকিয় টীম বিমানে করে নেপালের উদ্দেশ্যে ৬৮ জন সদস্য ও ছয়টি উদ্ধারকারী কুকুর পাঠান[৮৮][৮৯][৯০] নেপালে চীনা দূতাবাস আহত চীনা নাগরিকদের সাহায্যের উদ্দেশ্যে একটি আপৎকালীন ব্যবস্থা চালু করেন।[৯১] ২৬শে এপ্রিল চীন সরকার নেপালের ত্রাণকার্য্যে ২০ মিলিয়ন CN¥ অর্থসাহায্যের কথা ঘোষণা করেন।[৯২]
  •  চেক প্রজাতন্ত্র — চেক প্রজাতন্ত্রের পক্ষ থেকে ২০ মিলিয়ন চেক ক্রাউন অর্থসাহায্য এবং ৩৬ জনের চিকিৎসক দল ও ১৩ জন দমকলকর্মী পাঠানোর কথা ঘোষণা করা হয়।[৯৩] বিদেশমন্ত্রী লুবোমির জোরালেক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানান।[৯৪]
  •  ডেনমার্ক — ডেনমার্ক সরকারের পক্ষ থেকে ৫ মিলিয়ন ড্যানিশ ক্রোন অর্থসাহায্যের কথা ঘোষণা করা হয়।[৯৫]
  •  মিশর — মিশর সরকার নেপালের জনগণের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।[৯৬]
  •  জার্মানি — জার্মান সরকার সাহায্যের আশ্বাস দেন।[৯৭]
  •  ভ্যাটিকান সিটিপোপ ফ্রান্সিস ভূমিকম্পে আহত ও মৃতদের আত্মার শান্তির জন্য ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করেন।[৯৮][৯৯]
  •  ভারত — ভূমিকম্পের পনেরো মিনিটের মধ্যে[১০০] প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ত্রাণসামগ্রী, চিকিৎসক ও উদ্ধারকারী দল পাঠানোর কথা ঘোষণা করেন। সেই দিন বিকেলবেলা রাষ্ট্রীয় আপদা মোচন বলের দশটি দল নেপাল পৌঁছে যান। সেই সঙ্গে ভারতীয় বিমানবাহিনীর দুইটি বিমান ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া শুরু করে।[১০১] অপারেশন মৈত্রী নামক নেপালের প্রতি ভারতের ত্রাণকার্য্য মিশনে ভারত তাঁবু ও খাদ্য সহ প্রায় ৪৩ টন ত্রাণসামগ্রী নেপালে পাঠায়।[১০২] মোদী নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালাকে ভারতের পক্ষ থেকে সমস্ত রকমের সাহায্যের আশ্বাস দেন।[১০৩] ভারতীয় সেনাবাহিনী নেপালে একজন মেজর জেনারেল পদাধিকারী উদ্ধারকার্য্য ও ত্রাণকার্য্য তত্ত্বাবধান করতে পাঠায়। ভারতীয় বিমানবাহিনী আইএল-৭৬, সি-১৩০জে হারকিউলিস and সি-১৭ গ্লোবমাস্টার ইত্যাদি বিমান ও এমআই-১৭ হেলিকপ্টার অপারেশন মৈত্রীতে প্রেরণ করে। আকাশ থেকে ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর কাজে আটটি এমআই-১৭ হেলিকটার ব্যবহার করা হয়েছে।[১০৪][১০৫] ভারতীয় বিমানবাহিনী রবিবার পর্য্যন্ত ৬০০-এর মতো ভারতীয় নাগরিককে উদ্ধার করে[১০৬][১০৭] এছাড়া ২৬শে এপ্রিল খাদ্য, জল, তাঁবু, কম্বল, চিকিৎসাসামগ্রী, চিকিৎসক, প্রকৌশল ও উদ্ধারকার্য্যে বিশেষজ্ঞ দল দশটি বিমানে করে পাঠানো হয়।[১০৮] মোদী অল ইন্ডিয়া রেডিওর মন কি বাত অনুষ্ঠানে এই বিপর্যয়ের কারণে নেপালের জনগণের দুঃখমোচনের অঙ্গীকার করেন।[১০৯] ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি পর্বতারোহী দল এভারেস্ট বেস ক্যাম্প থেকে ১৮জন পর্বতারোহীর মৃতদেহ উদ্ধার করেন।[৪৭][৪৮] ২৬শে এপ্রিল ভারতীয় বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার মাউন্ট এভারেস্টে উদ্ধারকার্য্য পরিচালনা করে।[৫৭] ২৬শে এপ্রিলের শেষে ভারত ৫০ টন পানীয় জল, ২২ টন খাদ্যদ্রব্য, ১০ টন কম্বল এবং ২ টন ঔষধ কাঠমাণ্ডু পৌঁছে দেয়। সোনৌলিরক্সৌলের পথে সরকার ৩৫টি বাসের মাধ্যমে আটকে পড়া ভারতীয়দের সড়কপথে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেন।[১১০]
  •  ইরান — রাষ্ট্রপতি হাসান রোহানি[১১১] ও বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মারঝিয়েহ আফখাম[১১২] নেপালের জনগণের প্রতি সমবেদনা জানান ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। ইরানীয় হিলাল আহমার নেপালে ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। [১১৩][১১৪]
  •  ইসরায়েল — প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু একটি চিকিৎসক ও উদ্ধারকারী দল নেপালে প্রেরণ করেন এবং সমস্ত ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।[১১৫] বিদেশমন্ত্রী গিলাদ এর্দান নেপালে অবস্থিত চব্বিশটি ইসরায়েলী শিশুর পরিবারকে ভারত হয়ে ইসরায়েল ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দেন।[১১৬] ২৬শে এপ্রিল, দুইটি এল অ্যাল ৭৪৭-৪০০ জাম্বো জেট বিমানে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর উদ্ধারকারী দল ও চিকিৎসএসামগ্রী প্রেরণ করা হয়।[১১৭]
  •  ইতালি — বিদেশমন্ত্রী নেপালের বিপর্যয়ের কারণে ৩,০০,০০০ অর্থ সাহায্য করেন।[১১৮]
  •  জাপানজাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি থেকে ৭০জন বিশেষজ্ঞকে ২৬শে এপ্রিল নেপাল পাঠানো হয়। এই দল জাপানের বিদেশ মন্ত্রক ও জাতীয় পুলিশ বাহিনীর বিশেষজ্ঞ ছাড়াও চিকিৎসক, সমন্বয়কারী দল, সন্ধানী কুকুর ও উদ্ধারকারীদের নিয়ে গঠিত।[১১৯]
  •  মালয়েশিয়া — বিদেশমন্ত্রী আনিফাহ আমান নেপালের প্রতি সাহায্যের আশ্বাস দেন।[১২০] পরে প্রধানমন্ত্রী নজিব রাজাক লকহীড সি-১৩০ হেলিকপ্টার করে ৩০ সদস্যের উদ্ধারকারী দল ও কুড়িজন চিকিৎসক এবং চিকিৎসাসামগ্রী পাঠানোর কথা ঘোষণা করেন।[১২১]
  •  মেক্সিকো — ভূমিকম্পের দিন মেক্সিকো সরকার সহায়তার আশ্বাস দেন।[৯৭]
  •  মোনাকো — ভূমিকম্পের দিন মোনাকো সরকার ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর আশ্বাস দেন[১১৮]
  •  নিউজিল্যান্ড — নিউজিল্যান্ড এক মিলিয়ন মুদ্রা ও ৪৫ জন উদ্ধার বিশেষজ্ঞ প্রেরণ করে।[১২২]
  •  নরওয়ে — বিদেশ মন্ত্রক থেকে জানানো হয় যে, নরওয়ে ৩০ মিলিয়ন নরওয়েজিয় ক্রোন নেপালকে দান করবে।[১২৩]
  •  পাকিস্তান — ভূমিকম্পের অব্যবহতি পরেই প্রধান মন্ত্রী নওয়াজ শরিফ একটি বিবৃতিতে পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। ভারত ও নেপালে পাকিস্তানি দূতাবাসকে সংশ্লিষ্ট দেশের জন্য সমন্বয় স্থাপন করে সমস্ত রকম সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়।[১২৪] নওয়াজ শরিফ সুশীল কৈরালাকে সমস্ত রকমের মানবিক সাহায্যের আশ্বাস দেন।[১২৫] সেই দিন, পাকিস্তান বিমানবাহিনী চারটি সি-১৩০ বিমানে ৩০-শয্যার একটি চলমান হাসপাতাল, ২০০০ সেনা আহার, ৬০০ কম্বল, ২০০ তাঁবু ও অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী[১২৬] ছাড়াও সেনা চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মী, উদ্ধারকর্মী, উদ্ধারকারী কুকুর পাঠানোর ব্যবস্থা করে।[১২৭]
  •  পোল্যান্ড — পোল্যান্ড ৩১ জন অগ্নিনির্বাপক বিশেষজ্ঞ, ৬ জন চিকিৎসক ও ১২টি উদ্ধারকারী কুকুর প্রেরণ করে।[১২৮][১২৯]
  •  রোমানিয়া — রাষ্ট্রপতি ক্লাউস ইওহানিস ভূমিকম্পে আক্রান্ত নেপালের জনগণের প্রতি একাত্মতা জ্ঞাপন করেন।[১৩০]

দাতা সংস্থা সম্পাদনা

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধান২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপসুনেত্রাআরাফাতের দিনকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকোকা-কোলাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিক্লিওপেট্রাঈদুল আযহাবাংলাদেশএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)উয়েফা ইউরো ২০২৪চে গেভারাবিশ্ব রক্তদাতা দিবসরাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)২০২৪ কোপা আমেরিকাকাজী নজরুল ইসলামমিয়া খলিফাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাহজ্জওয়াকার-উজ-জামানআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপশেখ মুজিবুর রহমানআবহাওয়াঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরসাকিব আল হাসানআর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলবাংলা ভাষামহাত্মা গান্ধীইব্রাহিম (নবী)মুহাম্মাদবাস্তুতন্ত্রউয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)সেন্ট মার্টিন দ্বীপপশ্চিমবঙ্গ