হুয়াই নদী

হুয়াই নদী (চীনা: ; ফিনিন: Huái Hé) হল গণচীনের একটি অন্যতম প্রধান নদী।[১] এটি হুয়াংহো এবং ইয়াংৎজে,[২] চীনের বৃহত্তম দুই নদীর মাঝে অবস্থিত এবং তাদের মতই পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে ধাবিত হয়। ভয়াবহ বন্যার কারণে হুয়াই নদী অত্যন্ত কুখ্যাত।

হুয়াই নদী (淮河)
হুয়াই হে
হুয়াই নদী
হুয়াই নদী
হুয়াই নদী
দেশচীন
রাজ্যসমূহহেনান, আনহুই, জিয়াংসু
উৎসটংবাই পর্বত
মোহনাইয়াংৎজে
দৈর্ঘ্য১,১১০ কিলোমিটার (৬৯০ মাইল)
অববাহিকা১৭৪০০০ বর্গকিলোমিটার (এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। বর্গমাইল)
প্রবাহ
 - গড়১১১০ /s (এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "১"। ft³/s)
হুয়াই নদীর মানচিত্র
হুয়াই নদীর মানচিত্র
হুয়াই নদীর মানচিত্র
ইয়াংঝউ-এর নিকটবর্তী ইয়াং ওয়াংফু বন্যাদ্বার (万福闸), এই অঞ্চলের অন্যতম প্রধান বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প।

হুয়াই নদী-কুইন পর্বত রেখাটিকে সাধারণত উত্তর ও দক্ষিণ চীন বিভক্তকারী রেখা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই রেখাটি চীনের ০ ডিগ্রীতে জানুয়ারি সমোষ্ণ রেখা এবং ৮০০ মিমি বৃষ্টিপাত রেখায় অবস্থিত (প্রায়)।

এটি একই সাথে উত্তর চীনের জিন সাম্রাজ্য এবং দক্ষিণ চীনের দক্ষিণ সং এ মধ্যকার ১১৪২ সালের শ্যাওক্সিং-এর চুক্তি মোতাবেক নির্মিত সীমানার কথাও স্মরণ করিয়ে দেয়।

হুয়াই নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ১,১১০ কিলোমিটার (৬৯০ মা), যার মধ্যের ১,৭৪,০০০ বর্গকিলোমিটার (৬৭,০০০ মা) নিষ্কাশন অঞ্চল।[২]

উৎপত্তি

সম্পাদনা

হুয়াই নদী হেনান প্রদেশের টংবাই পর্বত থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। এটি হেনানের দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তরে আনহুই এবং জিয়াংসুর উত্তর থেকে বয়ে গিয়ে ইয়াংজহৌর জিয়াংডুর ইয়াংৎজে নদীতে প্রবেশ করে।

ঐতিহাসিকভাবে, হুয়াই নদী একটি প্রশস্ত পথের মাধ্যমে ইউন্টিগুয়ানের হুয়াংহো নদীতে প্রবেশ করে। তখন এই নদীকে পার্শ্ববর্তী কৃষিজমিতে পানিসেচের জন্য ব্যবহৃত হত। তারই সাথে এটি খাল ও উপনদী এক বিশাল মিলনস্থলও বটে। ১১৯৪ সালে প্রবাহ শুরু হওয়ার পর থেকে হুয়াংহো নদী ক্রমাগত তার যাত্রাপথ পরিবর্তিত করে উত্তরের দিকে যেতে যেতে হুয়াই নদীর মধ্যে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে নদীভরাট এত বৃহদাকার ধারণ করে, যে হুয়াংহো যখন পরবর্তীকালে আরও উত্তরে বিরাটভাবে সরে যায় (১৮৯৭), তখন হুয়াই নদীর ভূগোল তাৎপর্যপূর্ণভাবে নতুন নতুন উঁচু দ্বীপ, হ্রদ, চর - ইত্যাদি তৈরি করতে থাকে। ফলে নদীর মধ্যভাগ থেকে নিম্নভাগের দিকে সাবলীলভাবে পানিপ্রবাহিত হতে পারত না, এবং নিম্নভাগের পানি সমুদ্রে যেতে বাধাগ্রস্ত হত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে, কারণ চিয়াং কাই-সেক সরকার জাপানি আক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায় হুয়াংহো নদীর দক্ষিণের বাঁধ খুলে দিয়ে নিম্নাঞ্চল সম্পূর্ণরূপে প্লাবিত করে দেয়। হুয়াংহো নদী পরবর্তী ৯ বছর ধরে উক্ত বাঁধের ফাটল ধরে প্রবাহিত হয়, যা হুয়াই নদীর প্রবাহকে ব্যাপকভাবে বাঁধাগ্রস্ত করে।

এই পরিবর্তনসমূহের কারণে হুয়াই নদীর পানি হংজ হ্রদ পর্যন্ত উঠে যায় এবং পরে ইয়াংৎজে নদীর দক্ষিণ বরাবর প্রবাহিত হতে থাকে। ছোট-বড়-মাঝারি মানের বন্যা প্রায়শই এই অঞ্চলে হয়ে থাকে, যা তীব্র দুর্ভোগের সৃষ্টি করে। ১৯৫০ সাল পর্যন্ত শেষ ৪৫০ বছরে হুয়াই নদী প্রতি শতকে প্রায় ৯৪টি বড়মাপের বন্যার সৃষ্টি করেছে।

হুয়াই নদীর সমস্যার সমাধান করতে হুয়াই নদী থেকে ইয়াংৎজে নদী ও সমুদ্র পর্যন্ত নির্মাণে কিছু ভিন্নতা আনার প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে। বর্তমানে, নদীর একটি বিশাল অংশ হংজ হ্রদ হয়ে ইয়াংৎজে নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়। উত্তর জিয়াংসু পানিসেচ খাল এর কিছু অংশের পানিকে সমুদ্রে যাবার পুরনো পথকে পৃথক করেছে এবং একই সাথে একটি সমান্তরাল চ্যানেল তৈরির কথাও ভাবা হচ্ছে। একই সাথে কিছু সংখ্যক উপনদীও পানির একটি অংশকে সমুদ্রে নিয়ে যায়।

পরিবেশগত প্রভাব

সম্পাদনা

চীনের তাপনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা মূলত কয়লানির্ভর। এ পদ্ধতি তুলনামূলকভাবে অদক্ষ ধরনের। শিল্পোন্নত দেশগুলোতে মূলত তড়িৎনির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থায় এ পদ্ধতি পরিচালিত হয়ে থাকে। তবে উত্তর চীনই ১৫ই নভেম্বর থেকে ১৫ই মার্চ পর্যন্ত এ পদ্ধতিতে তাপ নিয়ন্ত্রিত হয়। দক্ষিণাঞ্চলে সরকারি কোনো কাঠামো বা বেসরকারি ব্যবস্থা না থাকায় হুয়াই নদীর তীরবর্তী সাংহাই, নানজিং, চেংডু প্রভৃতি এলাকায় শীত ঠাণ্ডা ও কষ্টকর হিসেবেই দেখা দেয়। তা সত্ত্বেও ঐ অঞ্চলের অদগ্ধ কয়লা থেকে নির্গত TSP, SO2, NOx গ্যাস এ নদীর ওপর মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করে।[৩]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "The Control of the Huai River System in China"। ৪ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৫ 
  2. "Huai River"Encyclopædia Britannica। ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০১৪ 
  3. "Winter Heating or Clean Air? Unintended Impacts of China's Huai River Policy" (পিডিএফ) 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা

টেমপ্লেট:চীনের সাতটি বৃহৎ নদী


🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী