লক নেস দানব
লক নেস দানব হলো একটি ক্রিপটিড (প্রাণী যাদের অস্তিত্ত্বের কথা শোনা যায় কিন্তু বৈজ্ঞানীক কোন প্রমাণ নেই[৩])। জনশ্রুতি অনুসারে, এটি স্কটল্যান্ডের লক নেসে বসবাসকারী অনেক বড় অদ্ভুত প্রাগৈতিহাসিক ড্রাগণ আকৃতির পাখাওয়ালা একটি প্রাণী। বিভিন্ন সময় যদিও এর ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা পাওয়া যায় তবে এটি স্কটল্যান্ড ও এর আশেপাশের হৃদের অন্যান্য রহস্যময় দানবদের যে বর্ণনা পাওয়া যায় তার সাথে অনেকটা মিলে যায় বলে মনে করা হয়। এ প্রাণী এর অস্তিত্ব সম্পর্কে বিশ্বাস ও মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সূত্র ধরে, এটি প্রথম ১৯৩৩ সালে বিশ্ববাসীর নজড়ে আসে। অনেক বিতর্কিত ফোটোগ্রাফিক উপাদান এবং অস্তিত্ত্বের প্রমাণ সম্পর্কে অপর্যাপ্ত তথ্যের জন্য এ প্রাণীটিকে অনেকেই কাল্পনিক প্রাণী বলে মনে করে থাকেন।
দল | ক্রিপটিড |
---|---|
উপ দল | হৃদের দানব |
সর্বপ্রথম উল্লিখিত | ৫৬৫ (অতীত পর্যালোচনায়),[ক] 1802 (chronologically)[২] |
সর্বশেষ উল্লিখিত | ২০১৩ [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] |
অন্যান্য নাম(সমূহ) | নেসী, নিসাগ, "নেসীটারাস হোমবোপটেরেক্স" |
দেশ | স্কটল্যান্ড |
অঞ্চল | লক নেস |
আবাস | জলাশয় |
সাধারণ বিশ্বাস অনুসারে কোন প্রাণীর এতো দীর্ঘ সময় পৃথীবিতে টিকে থাকা সম্ভব নয় ও হৃদের গভীরে সর্যালোক প্রবেশ না করার কারণে এটিকে নিছক একটি গুজব বলে মনে করা হয়।[৪] বৈজ্ঞানীক সম্প্রদায়, এটিকে অধুনিককালের পুরাণ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।[৫] তবে এগুলো বাদ দিয়ে, লেক নেসের দানব পৃথিবীর অন্যতম রহস্য বলে বিবেচিত। ১৯৪০-এর দশক[৬] থেকে কিংবদন্তি এ দানবটিকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে ডাকা হয়ে থাকে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, নেসী (স্কটিশ নিসাগ থেকে এর উৎপত্তি)।[খ][৭] ক্রিপ্টোজুলজিতে (রহস্যময় প্রাণী সম্পর্কিত বিজ্ঞান) বিগফুট, ইয়েতি, সাসকুয়াচের মতো রহস্যঘেরা প্রাণীদের পাশাপাশি নেসীও স্থান করে নিয়েছে।
ব্যুৎপত্তি সম্পাদনা
সর্বপ্রথম ১৯৩৩ সালের ২রা মে অ্যালেক্স ক্যামপবেল নামক একজন জলভূমির গোমস্তা, পার্ট-টাইম সাংবাদিক ইনভার্নেস কোরিয়ারের এক প্রতিবেদনে ইংরেজি মোনস্টার (দানব) শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন।[৮][৯][১০] ৪ঠা আগস্ট ১৯৩৩ সালে কোরিয়ারম, লন্ডনের জর্জ পাইচার নামের এক ব্যক্তির বরাত দিয়ে একটি সম্পূর্ণ সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে তাতে উল্লেখ করা হয়, তিনি ও তার স্ত্রী একদিন দেখেন একটি ড্রাগন আকৃতির বা প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী তার মুখে একটি জন্তু নিয়ে রাস্তা পার হয়ে হৃদের দিকে যাচ্ছে।[১১] এরপর থেকে উক্ত কোরিয়ারের অফিসে বিভিন্ন সময় অনেক চিঠি আসতে থাকে যাতে ব্যক্তিগতভাবে বা পারিবারিকভাবে লক নেসের রহস্যময় প্রাণটি দেখতে পাওয়ার কথা দাবি করা হয়।[১২] শীঘ্রিই কাহিনীটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং এটিকে দানব মাছ, জলদানব বা ড্রাগন বিভিন্ন নামে অবহিত করা হয়[১৩]; এভাবেই লক নেস দানব কথাটি জনপ্রিয় হয়।[১৪] ৬ই ডিসেম্বর ১৯৩৩ সালে হাগ গ্রে নামে একজন প্রথম প্রাণীটির একটি ছবি প্রকাশ করেন ও এটি ডেইলি এক্সপ্রেসে প্রকাশিত হয়েছিল।[১৫] এর পরপরই স্কটল্যান্ডের রাষ্ট্রপ্রধান প্রাণটির উপর কোন ধরনের আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য পুলিসকে দায়িত্ব দেন ও রহস্যময় প্রাণীটি সরকারি মর্যাদা লাভ করে।[১৬] ১৯৩৪ সালে লন্ডনের একজন সার্জন একটি ছবি প্রকাশ করেন যা সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয় ও এটি সার্জনের আলোকচিত্র নামে পরিচিত।[১৭] একই বছর আর.টি. গোড একটি বই প্রকাশ করেন যেখানে লেখকের ব্যক্তিগত তদন্ত ও ১৯৩৩-এর পূর্বের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ব্যাখা দেওয়া হয়। অন্যান্য লেখকেরাও পরবর্তীকালে বিভিন্ন বই প্রকাশ করেন ও দাবি করে প্রাণটি ষষ্ঠ শতাব্দির দিকেও দেখা গিয়েছিল।
পদটীকা সম্পাদনা
- টীকা
- ↑ The date is inferred from the oldest written source reporting a monster near Loch Ness.[১]
- ↑ Derived from "Loch Ness". Also a familiar form of the girl's name Agnes, relatively common in Scotland, e.g. the Daily Mirror 4 August 1932 reports the wedding of "Miss Nessie Clark, a Banffshire schoolteacher"
- তথ্যসূত্র
গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা
- Bauer, Henry H. The Enigma of Loch Ness: Making Sense of a Mystery, Chicago, University of Illinois Press, 1986
- Binns, Ronald, The Loch Ness Mystery Solved, Great Britain, Open Books, 1983, আইএসবিএন ০-৭২৯১-০১৩৯-৮ and Star Books, 1984, আইএসবিএন ০-৩৫২-৩১৪৮৭-৭
- Burton, Maurice, The Elusive Monster: An Analysis of the Evidence from Loch Ness, London, Rupert Hart-Davis, 1961
- Campbell, Steuart. The Loch Ness Monster – The Evidence, Buffalo, New York, Prometheus Books, 1985.
- Dinsdale, Tim, Loch Ness Monster, London, Routledge & Kegan Paul, 1961, SBN 7100 1279 9
- Harrison, Paul The encyclopaedia of the Loch Ness Monster, London, Robert Hale, 1999
- Gould, R. T., The Loch Ness Monster and Others, London, Geoffrey Bles, 1934 and paperback, Lyle Stuart, 1976, আইএসবিএন ০-৮০৬৫-০৫৫৫-৯
- Holiday, F. W., The Great Orm of Loch Ness, London, Faber & Faber, 1968, SBN 571 08473 7
- Mackal, Roy P., The Monsters of Loch Ness, London, Futura, 1976, আইএসবিএন ০-৮৬০০৭-৩৮১-৫
- Whyte, Constance, More Than a Legend: The Story of the Loch Ness Monster, London, Hamish Hamilton, 1957
তথ্যচিত্র সম্পাদনা
- Secrets of Loch Ness. Produced & Directed by Christopher Jeans (ITN/Channel 4/A&E Network, 1995).
বহিঃসংযোগ সম্পাদনা
- Nova Documentary On Nessie
- Smithsonian Institution
- Skeptic's Dictionary: Loch Ness "monster"
- Darnton, John (২০ মার্চ ১৯৯৪)। "Loch Ness: Fiction Is Stranger Than Truth"। The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০০৯।
- Photos of Nessie and other cryptids ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ মে ২০১৪ তারিখে