নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যান
নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপে অবস্থিত।[১][২] ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার পুরো দ্বীপটিকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে।[৩] বল্লারচর, চর ওসমান, কামলার চর এবং চর মুরি এই চারটি দ্বীপের মোট ১৬,৩৫২.২৩ হেক্টর এলাকা নিয়ে উদ্যানটি গঠিত। নিঝুম দ্বীপের জীববৈচিত্র্য বেশ সম্বৃদ্ধ। শীতকালে অসংখ্য পরিযায়ী জলচর ও পানিকাটা পাখি নিঝুম দ্বীপে বেড়াতে আসে। এই উদ্যানটি বৈশ্বিক বিপদগ্রস্ত পাখি দেশি গাঙচষার অন্যতম প্রধান বিচরণস্থল। এছাড়া এই দ্বীপে রয়েছে প্রচুর চিত্রা হরিণ। এখানকার বনভূমি মূলত প্যারাবন প্রকৃতির।
নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যান | |
---|---|
আইইউসিএন বিষয়শ্রেণী II (জাতীয় উদ্যান) | |
অবস্থান | হাতিয়া উপজেলা |
স্থানাঙ্ক | ২২°০৪′২২″ উত্তর ৯০°৫৯′৫৪″ পূর্ব / ২২.০৭২৮° উত্তর ৯০.৯৯৮২° পূর্ব |
আয়তন | ১৬,৩৫২.২৩ হেক্টর |
স্থাপিত | ২০০১ খ্রিস্টাব্দ |
কর্তৃপক্ষ | বাংলাদেশ বন বিভাগ |
ইতিহাস
সম্পাদনানিঝুম দ্বীপ ১৯৫০ সালের দিকে সমুদ্রবক্ষে জেগে ওঠে। নিঝুম দ্বীপের পূর্ব নাম ছিলো চর-ওসমান। কথিত আছে ওসমান নামের একজন বাথানিয়া তার মহিষের বাথান নিয়ে প্রথম নিঝুম দ্বীপে বসত গড়েন। তখন এই নামেই এর নামকরণ হয়েছিলো। পরবর্তীতে দ্বীপটি 'নিঝুম দ্বীপ' হিসেবে পরিচিতি পেয়ে যায়। ১৯৭০ এর আগে এখানে কোনো জনবসতি ছিল না। পরে হাতিয়া, শাহবাজপুর, রামগতির নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ দ্বীপটিতে আশ্রয় নেওয়া শুরু করে।[৩] বাংলাদেশের বনবিভাগ ৭০-এর দশকে বন বিভাগের কার্যক্রম শুরু করে। প্রথমে ১৯৭৮ সালে পরীক্ষামূলকভাবে চার জোড়া হরিণ ছাড়ে। পরবর্তীতে হরিণের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। ২০০১ সালে নিঝুম দ্বীপকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়।
জীববৈচিত্র্য
সম্পাদনাচিত্রা হরিণ নিঝুম দ্বীপের প্রধান বন্যপ্রাণী। নিঝুম দ্বীপে একর প্রতি চিত্রল হরিণের ঘনত্ব সুন্দরবনের চেয়ে তিনগুণ বেশি। বাঘের মতো কোনো মাংসাশী প্রাণী না থাকায় দ্রুতগতিতে এদের বংশবৃদ্ধি হচ্ছে।[৪] অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে রয়েছে এশীয় উদবিলাই, মেছোবাঘ ইত্যাদি। বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মধ্যে রয়েছে নিশি বক, দেশি কানিবক, গো বক, দেশি পানকৌড়ি, ধূসর বক, কাদাখোঁচা, বালিহাঁস, কালো হাঁস, কোড়া, চিত্রিত পি-উ, তিলা সবুজপা ইত্যাদি।[৫] এই উদ্যান দেশি গাঙচষার অন্যতম প্রধান বিচরণস্থল। সরীসৃপের মধ্যে রয়েছে দেশি গুই সাপ ও নানান জাতের সামুদ্রিক কচ্ছপ। সামুদ্রিক কচ্ছপের গুরুত্বপূর্ণ প্রজননস্থল এই নিঝুম দ্বীপ।