তেনজিং নোরগে

তেনজিং নোরগে (নেপালী: तेन्जिङ नोरगे) (২৯ মে, ১৯১৪ - ৯ মে, ১৯৮৬) একজন নেপালী শেরপা পর্বতারোহী ছিলেন।.[১][২] তিনি এবং এডমন্ড হিলারি ১৯৫৩ সালের ২৯ শে মে যৌথভাবে বিশ্বে সর্বপ্রথম পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট পর্বত জয় করেন।[৩]

তেনজিং নোরগে
ব্যক্তিগত তথ্য
আসল নামনামগ্যাল ওয়াংদি
প্রধান পেশাপর্বতারোহী
জন্ম(১৯১৪-০৫-২৯)২৯ মে ১৯১৪
খুম্বু, নেপাল
মৃত্যু৯ মে ১৯৮৬(1986-05-09) (বয়স ৭১)
দার্জিলিং, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
জাতীয়তানেপালী নেপাল, ভারতীয় ভারত
পেশাগত তথ্য
শুরুর বয়স১৯ বছর
শুরুর পেশামালবাহক
উল্লেখযোগ্য আরোহণএভারেস্ট পর্বত- বিশ্বে সর্বপ্রথম আরোহণ, ১৯৫৩
বিখ্যাত জুটিএডমন্ড হিলারি
পরিবার
দম্পতিদাওয়া ফুটি, আং লামু, দাক্কু
সন্তানপেম পেম, নিমা, জামলিং, নোরবু

প্রথম জীবন

সম্পাদনা

নামগিয়াল ওয়াংদি ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসের শেষের দিকে নেপালের শোলোখুম্বু জেলার ত্সে-ছু গ্রামে এক শেরপা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[৪][৫][৬] তিনি তার জন্মতারিখ সম্বন্ধে অজ্ঞাত ছিলেন, পরবর্তীকালে ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৯শে মে তিনি এভারেস্ট পর্বত জয় করার পরে সেই দিনকে নিজের জন্মদিন বলে ঘোষণা করেন।[৭] তার পিতার নাম ছিল খাংলা মিংমা এবং মাতার নাম দোকমো কিন-জোম। রংবুক বৌদ্ধবিহারের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান লামা ঙ্গাগ-দ্বাং-ব্স্তান-দ্জিন-নোর-বু (ওয়াইলি: ngag dbang bstan dzin nor bu) তার নাম পরিবর্তন করে তেনজিং নোরগে নাম রাখেন।[৮] ছোটবেলায় তেনজিংকে স্থানীয় এক বৌদ্ধমঠে লামা হওয়ার জন্য শিক্ষিনবিশী করতে পাঠানো হয় কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই তেনজিং বাড়ি পালিয়ে আসেন।[৯] ১৩ বছর বয়সে তিনি বাড়ি থেকে কাঠমান্ডু পালিয়ে যান এবং ছয় সপ্তাহ পরে ফিরে আসেন। ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে ১৮ বছর বয়সে অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে তেনজিং বারো জন সঙ্গীর সাথে দার্জিলিং শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হন কিন্তু ভারত-নেপাল সীমান্তে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলে তেনজিংকে এক স্থানীয় নেপালী আশ্রয় দেন। সেখান থেকে তেনজিং দার্জিলিংয়ের নিকটবর্তী আলুবাড়ীতে যান ও দুধ বিক্রি শুরু করেন। এর মধ্যে হিউ রাটলেজের নেতৃত্বে ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দের ব্রিটিশ এভারেস্ট পর্বত অভিযানে মালবাহকের কাজ পেতে ব্যর্থ হন। এর পর তিনি তার বাড়ি ফিরে আসেন। কিছুদিন পরে তেনজিং আবার দার্জিলিং পালিয়ে আসেন এবং টংসুং বস্তিতে বসবাস শুরু করেন। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে দাওয়া ফুটি নামে এক শেরপা মেয়েকে বিবাহ করেন।[৭]

পর্বতারোহণ অভিযান

সম্পাদনা

১৯৩৫-১৯৩৮

সম্পাদনা
হিমালয়ান পর্বতারোহণ সংস্থানে তেনজিং নোরগের মূর্তি

এরিক শিপটনের নেতৃত্বে ১৯৩৫ ব্রিটিশ এভারেস্ট পর্বত অভিযান তেনজিংয়ের জীবনের প্রথম পর্বতারোহণ অভিযান। এই অভিযানে তিনি মালবাহক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। তার দৈনিক মজুরি ছিল বারো আনা এবং বরফে মাল পৌঁছে দিলে মজুরী এক টাকা। এই অভিযানে তেনজিং নিচের শিবিরে প্রতিদিন ৯০ পাউন্ড মাল এবং বরফে ৫০ পাউন্ড ওজনের মাল বহন করেছিলেন এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পর্বতারোহণের কলা কৌশল শিখেছিলেন। এই দল বাইশ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত নর্থ কল অব্দি আরোহণ করে এবং তেনজিং সহ শেরপা মালবাহকেরা এই উচ্চতায় মাল পৌঁছে দেন। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের বসন্ত কালে ভারতীয় ডাক বিভাগের কর্মী কুকের নেতৃত্বে চব্বিশ হাজার ফুট উচ্চতার কাব্রু শৃঙ্গ অভিযানে তেনজিং মালবাহক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। হিউ রাটলেজের নেতৃত্বে ১৯৩৬ ব্রিটিশ এভারেস্ট পর্বত অভিযান তেনজিংয়ের জীবনের দ্বিতীয় এভারেস্ট পর্বত অভিযান। খারাপ আবহাওয়ার জন্য দলটি বহু কষ্টে নর্থ কল অব্দি আরোহণ করে ফিরে আসে। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে ডন স্কুলের শিক্ষক গিবসন ও মার্টিনের সঙ্গে তেনজিং ২০,৭২০ ফুট উচ্চতার বন্দরপুঞ্ছ শৃঙ্গে অভিযান করেন। কিন্তু প্রচন্ড তুষারপাতের জন্য ১৭০০০ ফুট থেকে তাদের নেমে আসতে হয়।[৭]

তৃতীয়বার এভারেস্ট পর্বত অভিযান

সম্পাদনা

হ্যারল্ড উইলিয়াম টিলম্যানের নেতৃত্বে ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের ব্রিটিশ এভারেস্ট পর্বত অভিযান তেনজিংয়ের জীবনের তৃতীয় এভারেস্ট পর্বত অভিযান। রংবুক হিমবাহে মূল শিবির তৈরী করার পর নর্থ কলকে এড়িয়ে এভারেস্ট পর্বত আরোহণ করার দ্বিতীয় পথ খোঁজার উদ্দেশ্যে মূল শিবির থেকে টিলম্যান, তেনজিং নোরগে, আং শেরিং, আং জিংমে লোলা গিরিবর্ত্মে পৌঁছন। কিন্তু সেখানকার আবহাওয়া খারাপ থাকায় তারা মূল শিবিরে ফিরে আসেন। মূল শিবির থেকে একটা দল পূর্ব রংবুক হিমবাহ ধরে, অপর একটি দল মূল রংবুক হিমবাহ ধরে যাত্রা করে। মূল রংবুক হিমবাহ ধরে যাত্রাকারী দলের অলিভার, টিলম্যান, তেনজিং, ওয়াংদি এবং আরো দুজন শেরপা হিমানী সম্প্রপাতের কবলে পড়লেও কোনরকম ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই বেরিয়ে আস্তে সক্ষম হন। ২২,০০০ ফুট উচ্চতার নর্থ কলে চার নম্বর শিবির স্থাপন করে এরিক শিপটন, ফ্রাঙ্ক স্মাইথ, তেনজিং নোরগে, আং শেরিং, ওয়াংদি নরবু, রিনজিং, লোবসাং, লাকপা তেনজিং এবং ওলো ভুটিয়া উত্তর পূর্ব দিক দিয়ে উঠে ২৫,৮০০ ফুট উচ্চতায় পঞ্চম শিবির স্থাপন করেন। চার থেকে পাঁচ নম্বর শিবিরে আসার পথে দুজন শেরপা অসুস্থ হয়ে পড়লে নোরগে পুনরায় নেমে প্রয়োজনীয় তাঁবু ও জ্বালানী নিয়ে ঐ একই পথ ঐ দিনে আবার উঠে আসেন। পরের দিন ২৭,০০০ ফুট উচ্চতা অব্দি আরোহণ করে ষষ্ঠ শিবির স্থাপন করা হয়। এই অভিযান ব্যর্থ হলেও তেনজিং সহ যে সমস্ত শেরপারা ষষ্ঠ শিবির পর্যন্ত আরোহণ করেন, তাদের প্রথম টাইগার উপাধি ও পদক দেওয়া হয়।[৭]

১৯৩৯-১৯৫১

সম্পাদনা

১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে তেনজিং কানাডার পর্বতারোহী স্নিটন দম্পতির সঙ্গে হিন্দুকুশ পর্বতমালার ২৫,২৬০ ফুট উচ্চতার তিরিচমির পর্বতে অভিযান করেন, কিন্তু ভাল সরঞ্জামের অভাবে, তীব্র হাওয়া ও ঠান্ডার দাপটে ২৩,০০০ ফুট থেকে নেমে আসতে বাধ্য হন। ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে ডন স্কুলের শিক্ষক গিবসন ও মার্টিনের সঙ্গে তেনজিং দ্বিতীয়বার বন্দরপুঞ্ছ শৃঙ্গে পুনরায় অভিযান করেন। কিন্তু এবারও প্রচন্ড তুষারপাতের জন্য ১৮০০০ ফুট থেকে তাদের নেমে আসতে হয়। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে কানাডার আর্ল ডেনম্যানের উৎসাহে তিব্বত প্রবেশের অনুমতি ছাড়াই এভারেস্ট পর্বত অভিযানে যোগদান করেন। সীমান্তের নজরদারী এড়িয়ে তিনজনের এই দল তিব্বতে প্রবেশ করে অপ্রচলিত পথে রংবুক হিমবাহে পৌঁছন। কিন্তু উপযুক্ত সরঞ্জামের অভাবে নর্থকল থেকে তারা ফিরে আসতে বাধ্য হন। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে সুইজারল্যান্ডের আন্দ্রে রসের নেতৃত্বে একটি সুইস পর্বতারোহী দলের সঙ্গে ২২০০০ ফুট উচ্চতার কেদারনাথ পর্বতশৃঙ্গ অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু শীর্ষগামী দলের আলফ্রেড সুটার ও ওয়াংদি নোরবু রজ্জুবদ্ধ অবস্থায় পা পিছলে হাজার ফুট নিচে পড়ে গেলে তেনজিং আঘাতপ্রাপ্ত নোরবুকে উদ্ধার করে নিরাপদে হাসপাতালে পৌঁছে আবার শিবিরে ফিরে এসে শীর্ষ আরোহণ করেন। সর্বপ্রথম কেদারনাথ শীর্ষ আরোহণ তেনজিংয়ের জীবনের প্রথম শৃঙ্গ জয়। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে সুইজারল্যান্ডের আন্দ্রে রসের নেতৃত্বে কেদারনাথ জয়ের পরে ঐ একই দলের সাথে তেনজিং তিব্বত সীমান্তের বলবালা ও কালিন্দী শৃঙ্গ সর্বপ্রথম জয় করেন। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে ডন স্কুলের শিক্ষক গিবসনের আমন্ত্রণে তেনজিং তৃতীয়বার বন্দরপুঞ্ছ অভিযানে অংশগ্রহণ করেন এবং রয় গ্রিনউড ও শেরপা কিন চোক শেরিংকে সঙ্গে করে সর্বপ্রথম এই শৃঙ্গ জয় করেন। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে থর্নলের নেতৃত্বে ২৬,৬৬০ ফুট উচ্চতার নাঙ্গা পর্বত অভিযানে তেনজিং অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু থর্নলে এবং ক্রেসের মৃত্যুতে এই অভিযান ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। তেনজিং বহু চেষ্টা করেও তাদের খুঁজে না পেয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হন। ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে রোগার ডুপ্লের নেতৃত্বে ফরাসীদের নন্দাদেবী অভিযানে তেনজিং যোগদান করেন। এই দলের উদ্দেশ্য ছিল প্রথমে তারা ২৫,৬০০ ফুট উচ্চতার নন্দাদেবী মূল শৃঙ্গ আরোহণ করে ২৩,০০০ ফুট উঁচুতে নন্দাদেবী মূল ও নন্দাদেবী পূর্ব শৃঙ্গ সংযোগচুতে দুই মাইল লম্বা তীক্ষ্ন শৈলশিরা ধরে এগিয়ে ২৪,৪০০ ফুট উচ্চতার নন্দাদেবী পূর্ব শৃঙ্গ আরোহণ করা। কিন্তু ডুপ্লে ও গিলবার্ট ভিগনেস নন্দাদেবী মূল শৃঙ্গ আরোহণ করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গেলে তেনজিং এবং ডুবো তাদের খোঁজে নন্দাদেবী পূর্ব শৃঙ্গ আরোহণ করে ফিরে আসেন। এরপর ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দের শরতে তেনজিং সুইজারল্যান্ডের জর্জ ফ্রের নেতৃত্বে ১৯০০০ ফুট উচ্চতার কাং পর্বত অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু আরোহণের সময় জুতোতে ক্র্যাম্পন না লাগানোয় ফ্রে পিছলে গিয়ে হাজার ফুট নিচে পড়ে গিয়ে মারা যান। তাকে বাঁচাতে গিয়ে তেনজিংয়ের একটা আঙুল ভেঙে যায়।[৭]

পঞ্চমবার এভারেস্ট পর্বত অভিযান

সম্পাদনা

১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের বসন্তকালে তেনজিং সুইজারল্যান্ডের এডওয়ার্ড উইস-ডুনান্টের নেতৃত্বে এভারেস্ট অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। জেনেভা স্পার ধরে বরফের ধাপ কেটে সিঁড়ি বানিয়ে ও দড়ি খাটিয়ে আরোহণের চেষ্টা শুরু হয় ও সাউথ কলের মাঝামাঝি দুরত্বে মালপত্র আনা হয়। এখান থেকে তেনজিং নোরগে, রেমন্ড ল্যাম্বার্ট, লিয়ঁ ফ্লোরি, রেনে আউবার্ট ও অন্য শেরপা সদস্যরা এগিয়ে যান। ২৬শে মে সকাল দশটায় তারা সাউথ কল পৌঁছন ও ষষ্ঠ শিবির স্থাপন করেন। সাউথ কল থেকে শেরপারা ক্লান্তিজনিত কারণে নেমে গেলে একদিনের খাবার, একটি তাঁবু ও চারটি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে সাউথ কল থেকে ল্যাম্বার্ট, ফ্লোরি, আউবার্ট ও তেনজিং নোরগে শীর্ষের দিকে আরোহণ শুরু করেন। বরফের ঢাল পার হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব শৈলশিরা ধরে উঠে প্রায় সাড়ে সাড়ে ২৮,২৫০ ফুট উচ্চতা উচ্চতায় শিবির স্থাপন করা হলে ফ্লোরিআউবার্ট নেমে যান। পরের দিন ল্যাম্বার্ট ও তেনজিং ৮,৬০০ মিটার (২৮,২০০ ফু) উচ্চতা অব্দি পৌঁছে নেমে আসার সিদ্ধান্ত নেন[১০], যা পর্বতারোহণের ইতিহাসে রেকর্ডে পরিণত হয়। এই অভিযানে তেনজিংকে একজন পর্বতারোহী অভিযাত্রী হিসেবে মর্যাদা দেওয়া, যার ফলে সুইস অভিযাত্রী দল, বিশেষ করে ল্যাম্বার্টের সঙ্গে তার দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের সূচনা হয়। পরে শরৎকালে তিনি গ্যাব্রিয়েল চেভালের নেতৃত্বে সুইস দলের এভারেস্ট অভিযানে অংশগ্রহণ করেন, কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে ৮,১০০ মিটার (২৬,৫৭৫ ফু) উচ্চতা থেকে সল ফিরে আসতে বাধ্য হয়।[৭]

সর্বপ্রথম এভারেস্ট পর্বত শৃঙ্গ জয়

সম্পাদনা
১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে এডমন্ড হিলারি ও তেনজিং নোরগে

১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে জন হান্টের নেতৃত্বে ব্রিটিশদের এভারেস্ট পর্বত অভিযানে তেনজিং অংশগ্রহণ করেন। এই অভিযানে দশ হাজার পাউন্ড মাল বহন করার জন্য ৩৬২ জন মালবাহক ও ২০ জন শেরপা সহ চার শতাধিক মানুষ অংশ গ্রহণ করেছিলেন।[১১] মার্চ মাসে বেস ক্যাম্প তৈরী করে ধীরে ধীরে দলটি ৭,৮৯০ মিটার (২৫,৮৮৬ ফু) উচ্চতায় আরোহণ করে সাউথ কলে তাদের অন্তিম শিবির স্থাপন করেন। ২৬শে মে টম বুর্দিলঁচার্লস ইভান্স শৃঙ্গজয়ের প্রচেষ্টা করে কিন্তু ইভান্সের অক্সিজেন সরবরাহকারী ব্যবস্থায় গোলোযোগ দেখা দিলে তারা শৃঙ্গ থেকে ৩০০ ফুট নিচে থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হয়।[১২] এরপর দলপতি হান্ট তেনজিং ও নিউজিল্যান্ডের পর্বতারোহী এডমন্ড হিলারিকে শৃঙ্গজয়ের চেষ্টা করতে নির্দেশ দেন। ২৮শে মে তারা আং ন্যিমা, আলফ্রেড গ্রেগরিজর্জ লোর সহায়তায় তারা ৮,৫০০ মিটার (২৭,৮৮৭ ফু) উচ্চতায় তাদের শিবির স্থাপন করলে ন্যিমা, গ্রেগরি ও লো নিচে ফিরে যান। হিলারির জুতো সারা রাত তাঁবুর বাইরে থাকায় পরদিন সকালে সেগুলি জমে গেলে দুই ঘণ্টা ধরে দুইজনে মিলে চেষ্টা করে সেগুলিকে পূর্বাবস্থায় নিয়ে আসেন ও ত্রিশ পাউন্ড ওজনের সরঞ্জাম নিয়ে তারা শৃঙ্গ আরোহণের চেষ্টা শুরু করেন।[১৩] শৃঙ্গের ঠিক নিচে চল্লিশ ফুটের খাড়া একটি পাথরের দেওয়ালে একটি খাঁজ ধরে হিলারি ও তাকে অনুসরণ করে তেনজিং আরোহণ করে সকাল ১১:৩০ মিনিটে এভারেস্ট পর্বত শৃঙ্গ জয় করেন।[১৪][১৫] পর্বতশৃঙ্গে তারা পনেরো মিনিট ছিলেন। এই সময় হিলারি তেনজিংয়ের আলোকচিত্র তোলেন[১৬][১৭]। এই আলোকচিত্রে তেনজিংকে তার বরফ-কুঠার তুলে ধরে থাকতে দেখা যায়। তার বরফ-কুঠারে জাতিসংঘ, ইংল্যান্ড, নেপালভারতের পতাকা লাগানো ছিল। তেনজিংয়ের বর্ণনা অনুসারে হিলারি কোন কারণে নিজের আলোকচিত্র তোলাতে অস্বীকৃত হন।[৭][১৮][১৯] তাদের শৃঙ্গজয়ের প্রমাণস্বরূপ শৃঙ্গ থেকে তারা নিচের পর্বতগাত্রের আলোকচিত্রও তোলেন।[১৭] শৃঙ্গজয়ের ফলশ্রুতিতে পরবর্তীকালে তাদের দুইজনকে ঘিরে নেপাল ও ভারতে জনমানসে প্রচণ্ড উচ্ছাস তৈরী হয়। হিলারিহান্ট নাইট উপাধিতে ভূষিত হন[২০] এবং তেনজিংকে জর্জ পদক প্রদান করা হয়।[২১][২২][২৩]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
🔥 Top keywords: প্রধান পাতাতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধান২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরটুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকের রেকর্ড তালিকাঅসীম সাহাক্লিওপেট্রারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)চন্দ্রবোড়াবাংলাদেশ২০২৪ কোপা আমেরিকামিয়া খলিফানির্জলা একাদশীএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)উয়েফা ইউরো ২০২৪কোকা-কোলাজর্জিয়াশাকিব খানআবহাওয়া৬৯ (যৌনাসন)ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনকাজী নজরুল ইসলামভূমি পরিমাপবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতকুরবানীস্বামী বিবেকানন্দবাংলা ভাষাএকাদশীঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরওয়েস্ট ইন্ডিজদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিঈদুল আযহাউয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপমহাত্মা গান্ধীআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপমুহাম্মাদশেখ মুজিবুর রহমান