গ্রামদেবতা

গ্রামের রক্ষাকর্তা দেবতা

গ্রামদেবতা (দেবনাগরী: ग्रामदेवता; অর্থাৎ "গ্রামের রক্ষাকর্তা দেবতা"[১]) হলেন ভারতের গ্রামাঞ্চলে পূজিত গ্রামের রক্ষাকর্তা দেবতা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে গ্রামদেবতারা দেবী হলেও, কয়েকটি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রমও লক্ষিত হয়। পশ্চিমবঙ্গের রাঢ় অঞ্চলে পূজিত গ্রামদেবতা ধর্মঠাকুর হলেন পুরুষ গ্রামদেবতার একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন।[২] অপর এক উদাহরণ হল গ্রামীণ মহারাষ্ট্রের গ্রামদেবতা "ভৈরবর" (শিবের ভয়ংকর রূপ কালভৈরব)।[৩] গ্রামের রক্ষাকর্ত্রী দেবী হিসেবে গ্রামদেবীর পূজা দক্ষিণ ভারতে বিশেষভাবে প্রচলিত।

গুডিলোভার গ্রামদেবী মুত্যলাম্মা
ধর্মঠাকুরের পূজাস্থান, বাঁকুড়া জেলা, পশ্চিমবঙ্গ

দক্ষিণ এশিয়ায় "মাতৃকাদেবী" ধারণাটির প্রথম উদাহরণ পাওয়া গিয়েছে মেহেরগড়ে। এটি খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ সহস্রাব্দের পোড়ামাটির নারীমূর্তি। মনে করা হয় যে এই পুত্তলিকাগুলিই "মাতৃকাদেবী"-র প্রতীক ছিল। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয়-দ্বিতীয় সহস্রাব্দে হরপ্পা সভ্যতার ক্ষেত্রগুলি থেকেও অনুরূপ মূর্তি পাওয়া গিয়েছে। একটি মূর্তিতে দেখা যায়, এক নারীর গর্ভ থেকে একটি বৃক্ষ উদ্গত হচ্ছে এবং এক বৃক্ষে উপবিষ্ট এক নারীকে (সম্ভবত দেবী) অন্য এক নারী পূজা করছেন। দ্বিতীয় মূর্তিটির নিচের অংশে আরও সাত নারীকে দেখা যায়। কৃষিকার্যের সঙ্গে হরপ্পাবাসীদের সম্পর্কের সূত্রে মনে করা হয়, সেই যুগে ভূদেবী ধারণাটিও অনেকটা আজকের মতোই ছিল। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে চন্দ্রকেতুগড়ে প্রাপ্ত একটি পোড়ামাটির টুকরোয় এক গ্রামদেবীকে পূজার দৃশ্য পাওয়া যায়। এই ফলকটি খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীর। এই ফলকে রৌদ্রনিবারক ছাতা হাতে এক মূর্তি দেখা যায় (সম্ভবত দেবী), যাঁকে পূজা করা হচ্ছে মাটির পাত্র, ফল, ফুল ও অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে। আজও গ্রামদেবীদের এইভাবেই পূজা করা হয়। গ্রামদেবতা-সংক্রান্ত আরেকটি বহুল-প্রচলিত মূর্তিকল্প হল "সপ্তমাতৃকা"র মূর্তি। খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দীতে মহাভারতের পরবর্তী স্তরগুলিতে এই জাতীয় দেবীর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। বেদে সপ্তমাতৃকার উল্লেখ না থাকায় এই দেবীদের অবৈদিক উৎস থেকে উৎসারিত বলে মনে করা হয়।[৪] উর্বরতার দেবীদের পাশাপাশি আছেন বিভিন্ন রোগারোগ্যকারী দেবী। এঁদের মধ্যে এমন কিছু দেবী আছেন যাঁদের শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলি ভয়ংকর। মারিয়াম্মান ও মাতা এই জাতীয় দেবীর উদাহরণ। হরপ্পার যুগে এই জাতীয় ভয়ংকরী দেবীর চুলে অস্ত্র সজ্জিত থাকত। অনুরূপভাবে খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দী থেকে খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দীর মধ্যে দুর্গার ন্যায় দেবীরা পৌরাণিক হিন্দুধর্মে মিশে যান।[৪]

উদাহরণ

সম্পাদনা

চিত্রশালা

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Fuller, C. J. (মার্চ ১৯৮৮)। "The Hindu Pantheon and the Legitimation of Hierarchy"Man23 (1): 22–39। জেস্টোর 2803031ডিওআই:10.2307/2803031। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০২১ 
  2. "Dharma-Thakur | Indian deity"Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৪ 
  3. Syed Siraj Ul Hassan (১৯২০)। The Castes and Tribes of H.E.H. the Nizam's Dominions, Vol. 1। Asian Educational Services। পৃষ্ঠা 482। আইএসবিএন 8120604881 
  4. Elgood, Heather (২০০৪-০৯-০১)। "Exploring the roots of village Hinduism in South Asia"। World Archaeology36 (3): 326–342। আইএসএসএন 0043-8243এসটুসিআইডি 144268377ডিওআই:10.1080/0043824042000282777 
🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধান২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপসুনেত্রাআরাফাতের দিনকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকোকা-কোলাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিক্লিওপেট্রাঈদুল আযহাবাংলাদেশএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)উয়েফা ইউরো ২০২৪চে গেভারাবিশ্ব রক্তদাতা দিবসরাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)২০২৪ কোপা আমেরিকাকাজী নজরুল ইসলামমিয়া খলিফাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাহজ্জওয়াকার-উজ-জামানআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপশেখ মুজিবুর রহমানআবহাওয়াঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরসাকিব আল হাসানআর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলবাংলা ভাষামহাত্মা গান্ধীইব্রাহিম (নবী)মুহাম্মাদবাস্তুতন্ত্রউয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)সেন্ট মার্টিন দ্বীপপশ্চিমবঙ্গ