কুরোশিও স্রোত

কুরোশিও স্রোত যা জাপান স্রোত বা কৃষ্ণ স্রোত নামেও পরিচিত, এক উত্তরমুখী উষ্ণ সমুদ্র স্রোত যা উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর -এর পঃ অংশে দেখা প্রবাহিত হতে দেখা যায়। উঃ আটলান্টিক মহাসাগর -এ প্রবাহিত উপসাগরীয় স্রোতের ন্যায় এটিও এক শক্তিশালী, মহাসাগরের পশ্চিম উপকূলবর্তী সমুদ্র স্রোত যা উঃ প্রশান্ত মহাসাগরীয় ক্রান্তীয় সমুদ্র-স্রোত বলয়ের পশ্চিম ভাগ গঠন করেছে।

কুরোশিও স্রোত যা ঘড়ির কাঁটার অভিমুখে গমনকারী উঃ প্রশান্ত মহাসাগরীয় ক্রান্তীয় সমুদ্র-স্রোত বলয়ের পশ্চিম ভাগ গঠন করেছে।

স্রোতের ভূতাত্ত্বিক প্রকৃতি সম্পাদনা

জাপান -এর দ্বীপপুঞ্জ এলাকা বেষ্টনকারী সমুদ্র স্রোত:১. কুরোশিও ২. কুরোশিও সম্প্রসারণ স্রোত ৩. কুরোশিও বিপরীতমুখী স্রোত ৪. সুশিমা স্রোত ৫. সুগারু স্রোত ৬. সোয়া স্রোত ৭. ওয়াশিও স্রোত ৮. লিয়াম স্রোত

ঘন নীল সমুদ্রের জলে উদ্ভব হয়েছে বলে কুরোশিও স্রোতের এইরুপ নামকরন হয়েছে। এটি উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের ক্রান্তীয় উষ্ণ সমুদ্র স্রোত বলয়ের পশ্চিম সীমান্ত জুড়ে প্রবাহিত হয়। কুরোশিও স্রোতের উৎপত্তি হয় উঃ নিরক্ষীয় সমুদ্র স্রোত থেকে যা ফিলিপিন্স -এর লুজ্‌ন নামক স্থানের পূর্ব উপকূলের কাছে এসে দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যায়; এদের মধ্যে দক্ষিণমুখী ভাগটি থেকে মিন্দানাও স্রোত এবং উত্তর মুখী ভাগটি থেকে কুরোশিও স্রোত -এর উদ্ভব হয়।[১] তাইওয়ান -এর পূর্বদিক থেকে, রিউকিউ দ্বীপমালার নিকট অবস্থিত গভীর ইয়নাগুনি সমুদ্রখাত ধরে কুরোশিও স্রোত পূর্ব চীন সাগরে প্রবেশ করে। এরপর কুরোশিও স্রোত পূর্ব চিন সাগরে অবস্থিত ওকিনাওয়া থ্রু নামক গভীর সমুদ্রতল অঞ্চলের প্রকৃতির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে, রিউকিউ দ্বীপমালার সমান্তরালে উত্তর অভিমুখে গমন করে এবং টোকারা প্রণালী ধরে চিন সাগর অঞ্চল পরিত্যাগ করে পুনরায় প্রশান্ত মহাসাগরে প্রবেশ করে।[২] এরপর স্রোতটি জাপান -এর দক্ষিণ উপকূল ধরে সর্পিলভাবে প্রবাহিত হয়। [৩] বোসো উপদ্বীপের কাছে এসে কুরোশিও স্রোত অবশেষে জাপান উপকূল পরিত্যাগ করে এবং কুরোশিও সম্প্রসারণ স্রোত হিসাবে প্রবাহিত হয়।[৪] প্রকৃতিগত ভাবে প্রশান্ত মহাসাগর -এর কুরোশিও স্রোত আটলান্টিক মহাসাগর -এর উপসাগরীয় স্রোতেরই অনুরুপ,[৫] যার মাধ্যমে ক্রান্তীয় অঞ্চলের উষ্ণ সমুদ্রজল মেরুপ্রদেশে প্রবাহিত হয়।

কুরোশিও স্রোতের শক্তি(প্রবাহ) তার প্রবাহপথের বিভিন্ন অংশে পরিবর্তিত হয়। পূর্ব চিন সাগরে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে দেখা গেছে যে, এই অঞ্চলে কুরোশিও স্রোতের প্রবাহ তুলনামুলকভাবে সুস্থিত,[৬][৭](প্রতি সেকেন্ডে ২৫ মিলিয়ন ঘনমিটার)। জাপান এর দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল ধরে,[২] প্রশান্ত মহাসাগর-এর অঞ্চলে পুনরায় প্রবেশের পর কুরোশিও স্রোতের শক্তি বৃদ্ধি পায়(প্রতি সেকেন্ডে ৬৫ মিলিয়ন ঘনমিটার), তবে ঋতুভেদে এই স্রোতের প্রবাহের শক্তির উল্লেখযোগ্য তারতম্য দেখা যায়।[৮]

জাপান -এর দক্ষিণ দিক দিয়ে প্রবাহিত কুরোশিও স্রোতের গতিপথে প্রতিদিন লক্ষ্য রাখা হয়।[৯] কুরোশিও স্রোতের উল্লেখযোগ্য প্রতিরূপগুলি হল, উত্তরমুখী উঃ প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্রোত, পূর্বমুখী ক্যালিফোর্নিয়া স্রোত, এবং দক্ষিণমুখী উত্তর নিরক্ষীয় স্রোত। কুরোশিও স্রোতের উষ্ণ সমুদ্রজল একপ্রকারে জাপান উপকূলের সামুদ্রিক প্রবাল প্রাচীরকে রক্ষা ও বংশবৃদ্ধি করতে সাহায্য করছে যা সারা বিশ্বের সবচেয়ে উত্তরতম প্রবাল প্রাচীর। জাপান সমুদ্রে প্রবাহিত কুরোশিও স্রোতের অংশকে সুশিমা স্রোত নামে অভিহিত করা হয়।

কুরোশিও স্রোতের প্রবাহ পথ অতীতে আলাধা ছিল কিনা, এই বিষয়ে বিতর্ক আছে। একটি ছদ্ম প্রমাণের ভিত্তিতে এই প্রস্তাব করা হয়েছিল যে হয়তো হিম যুগের শেষদিকে সমুদ্র স্তর ও মহাসাগরীয় পাতের পরিবর্তনের ফলস্বরূপ কুরোশিও স্রোত চিন সমুদ্রে প্রবেশ করতে পারেনি এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেই অবস্থান করছে।[১০] কিন্তু সাম্প্রতিক আরও নির্ভরযোগ্য প্রমাণ থেকে এই তথ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে কুরোশিও স্রোতের দিক কখনো পরিবর্তিত হয়নি,[১১][১২] সম্ভবত ৭০০,০০ বছর আগের থেকে এই স্রোত একইভাবে প্রবাহিত হয়ে আসছে।[১৩].

জৈবিক বৈশিষ্ট্য সম্পাদনা

বিতরণ সম্পাদনা

পশ্চিম সীমান্ত স্রোতের মাধ্যমে সমুদ্রে বসবাসকারী বিভিন্ন অণুজীব ও জৈব পদার্থ যার প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে, সেগুলি সমুদ্রের বহু দুরত্ব থেকে ভেসে আসে। বিভিন্ন সামুদ্রিক অণুজীব তাদের জীবনচক্র সম্পন্ন করার জন্য এই স্রোতের মাধ্যমে মহাসাগরের এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে স্থান পরিবর্তন করে।[১৪] রিউকিউ দ্বীপমালার উপকূল অঞ্চল ধরে যে সামুদ্রিক লার্ভার পরিব্রাজন হয় তার জন্য কুরোশিও স্রোতের প্রবাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।[১৫] ক্রান্তীয় সমুদ্রস্রোত বলয় বিশ্বের সমস্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের এক বিস্তৃত অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং এই সমুদ্র স্রোত বলয়ের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। বিশ্বব্যাপী বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মান নিয়ন্ত্রণে এর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা আছে।

কুরোশিও স্রোতের উপগ্রহ চিত্র বর্ণনা করে যে কীভাবে এই স্রোতটি সর্পিলাকারে গমন করে এবং ১০০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার (৬০ থেকে ১৯০ মাইল) -এর ব্যবধানে বিচ্ছিন্ন ঘূর্ণন স্রোত বা ঘূর্ণির সৃষ্টি করে। এই ঘূর্ণন স্রোতগুলি উতপত্তি হওয়ার পর বেশ কয়েক মাস ধরে তাদের উৎপত্তিস্থলেই অবস্থান করে এবং এই ঘূর্ণন স্রোতগুলির অন্তর্ভুক্ত জৈব পদার্থ বা জীব এদের উৎপত্তিস্থলের উপর নির্ভরশীল হয়। যদি এই ঘূর্ণিগুলি জাপানের উপকূল এবং প্রবাহিত সমুদ্র স্রোতের মধ্যবর্তী স্থানে উৎপন্ন হয় তাহলে সেই ঘূর্ণিগুলীর দ্বারা মহিসোপানের উপর আঘাত করার সম্ভাবনা থাকে এবং এই ঘূর্ণিগুলির তীব্র গতিশক্তির কারণে তারা তাদের মধ্যে প্রচুর পরিমানে জল আকর্ষণ ও সঞ্চয় করে রাখতে সক্ষম হয়। এই ঘূর্ণন স্রোতগুলির আকার এবং শক্তি, প্রবাহমান সমুদ্র স্রোত থেকে এদের অবস্থানের দুরত্বের উপর নির্ভর করে। শক্তিশালী মহাসাগরীয় স্রোতের সঙ্গে যুক্ত ঘূর্ণিগুলির শক্তি কম হয় এবং দূরে অবস্থানকারী ঘূর্ণিগুলির শক্তি বেশি হয়। সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় উৎপাদনকারী ঘূর্ণিগুলি থেকে বিশ্বের অর্থনৈতিক ও উৎপাদন ব্যাবস্থার উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।[১৪] কারণ এর ফলে সমুদ্রের শীতল, জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ জল উপকূলে বয়ে নিয়ে আসে এবং ভূমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। বালুচর অঞ্চলে তরুন মাছের সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়।

প্রভাব সম্পাদনা

জাপান-এর হোক্কাইডোর নিকট ওয়াশিও স্রোত এবং কুরোশিও স্রোত -এর সংঘর্ষ হয়ে ঘূর্ণন স্রোতের উদ্ভব হচ্ছে।

ঘূর্ণন স্রোতের প্রভাব সম্পাদনা

কুরোশিও একটি উষ্ণ সমুদ্র স্রোত যার প্রায় ১০০ কিলোমিটার (৬২ মাইল) প্রশস্ত প্রবাহ পথের বার্ষিক গড় সমুদ্র-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (৭৫° ফাঃ) যার ফলস্বরূপ এই স্রোত প্রায়ই ছোট ছোট ঘূর্ণন স্রোত উৎপন্ন করে। কুরোশিও স্রোতকে এক মধ্যম মানের স্বতন্ত্র উচ্চ উত্পাদনশীল বাস্তুসংস্থান হিসাবে চিহ্নিত করা হয় কারণ এই স্রোত, সিউইএফএস বিশ্বব্যাপী প্রাথমিক উত্পাদনশীলতার ভিত্তিতে, প্রতি বছর বর্গমিটার প্রতি ১৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম (৫ থেকে ১১ ওজ) কার্বন উৎপাদন করে। এই স্রোতের প্রবাহপথে অবস্থিত উপকূল অঞ্চলগুলি অত্যন্ত বেশি পরিমানে ক্লোরোফিল সমৃদ্ধ হয়।[১৬]

তথ্যভিত্তিক প্রমাণ অনুযায়ী ঘূর্ণন স্রোতগুলি কুরোশিও স্রোতের মাধ্যমে প্রবাহিত সামুদ্রিক লার্ভার সংরক্ষণ এবং জীবনধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।[১৭] স্রোতের প্রবাহপথে সামুদ্রিক অণুজীব বা প্ল্যাঙ্কটনের পরিমান বছরে বৃদ্ধি ও হ্রাস পেতে থাকে এবং কুরোশিও স্রোতের লাগোয়া ঘূর্ণিগুলিতে এর পরিমান সর্বাধিক হয়। উষ্ণ কেন্দ্রযুক্ত ঘূর্ণন স্রোতগুলির উৎপাদনশীলতা সবচেয়ে বেশি থাকে। কুরোশিও স্রোতের উষ্ণ কেন্দ্রের ঘূর্ণিগুলির জৈব বৈচিত্র্য ও উচ্চ উত্পাদনশীলতার দুটি কারণ বর্তমান, একটি হল ঘূর্ণির পরিধি অঞ্চলের উচ্চ নিঃসরণ ক্ষমতা এবং অপরটি হল, কুরোশিও স্রোতের সাথে সাথে ঘূর্ণন স্রোতগুলির উত্তর অভিমুখে গমন করার সাথে সাথে তার মধ্যে শীতল জলের সংযোজন। লক্ষ্য করা গেছে যে বসন্ত ঋতুর সময়কালে ঘূর্ণন স্রোতগুলির কেন্দ্রের তাপমাত্রায় পরিবর্তন ঘটে কিন্তু এর পরিধি অঞ্চলের জলের তাপমাত্রার কোনো রকমফের হয়না।[১৪]

১৯৯৮-এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে উষ্ণ কেন্দ্রর ঘূর্ণিগুলির প্রাথমিক উত্পাদনশীলতা এবং জৈব বৈচিত্র্য তাদের পরিধি অঞ্চলের শীতল জল স্রোতের প্রায় সমান হয়। [১৪] ঘূর্ণন স্রোতের অন্তর্বর্তী সামুদ্রিক অণুজীব ফাইটোপ্লাঙ্কটনের ঘনত্ব নিয়ে উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার হয়েছে।[১৪] উষ্ণ কেন্দ্রীয় ঘূর্ণি স্রোতের মধ্যে সামুদ্রিক অণুজীব ও মৎস্য প্রজাতির ঘনত্ব নিয়েও পরবর্তীকালে উল্লেখযোগ্য গবেষণা হয়েছে।

মহাসাগরের জলের বিভিন্ন ঘনত্বের অঞ্চলে জীব প্রজাতির বৈচিত্র্য নির্ণয় করা হয় সেই অঞ্চলে অবস্থিত কোপপ্যাড নামক সামুদ্রিক অণুজীবের উপস্থিতির মাধ্যমে। গবেষণা থেকে দেখা যায় যে এই কোপপ্যাড কুরোশিও স্রোতের মাধ্যমেই লুজ্‌ন প্রণালী ধরে দঃ-পূঃ তাইওানের উপকূলে আসে।[১৮] দক্ষিণ-পূর্বের বর্ষার সময় দক্ষিণ চিন সাগরীয় স্রোত উত্তরদিকে গমন করে এবং গ্রীষ্মকালে তা কুরোশিও স্রোতের অভিমুখে গমন করে। এই কারণেই এই মহাসাগরীয় অঞ্চলে সীমান্তবর্তী জলস্রোতে সামুদ্রিক অণুজীব জুপ্লাঙ্কটনের সংখ্যায় বিবিধতা দেখা যায়।[১৮]

মৎস্য প্রজাতি সম্পাদনা

কোন সামুদ্রিক অঞ্চলের মৎস্য প্রজাতির জীবসমষ্টি নির্ভর করে সেই স্থানের বাস্তুতন্ত্রের নিম্ন স্তরের জীবসমষ্টি, এক্ষেত্রে সামুদ্রিক অণুজীব যা সামুদ্রিক মাছের খাদ্য তার উপর এবং মহাসাগরীয় পরিবেশের অবস্থার উপরও নির্ভর করে।[১৭] কুরোশিও-ওয়েশিও স্রোতের অঞ্চলে মৎস্য প্রজাতির সংখ্যা সামুদ্রিক অবস্থার ও স্রোতের অভিমুখের উপর নির্ভর করে, যেমন ওয়েশিও স্রোত -এর দক্ষিণ অভিমুখে অনধিকার প্রবেশ এবং হনশুর দক্ষিণে কুরোশিও স্রোতের লম্বা সর্পিল পথ সেই অঞ্চলের সামুদ্রিক জীব সমষ্টির উপর প্রভাব বিস্তার করে। ওয়েশিও স্রোতের মধ্যে সাব-আর্কটিক অঞ্চলের জল থাকে যা হনশুর পূর্ব উপকূলের জলের তুলনায় অধিক শীতল ও সতেজ জার জন্য পোলক, সার্ডাইন এবং অ্যাঙ্কোভি জাতীয় মাছের আধিক্য দেখা যায়। যখন ওয়েশিও স্রোত পুরনতা প্রাপ্ত হয়ে শীতল জল সহিত দক্ষিণ দিকে গমন করে সেই সময় সার্ডাইন জাতীয় মতস্য শিকারের জন্য উপযুক্ত। কুরোশিও স্রোতের সর্পিল পথও সার্ডাইন মাছের অবস্থান ও ঘনত্বের উপর প্রভাব ফেলে।[১৭]

সামুদ্রিক জীব সম্পাদনা

জাপানি উড়ন্ত স্কুইড (টোডরোডস প্যাসিফিকাস) এর তিনটি প্রজাতি রয়েছে যা শীত, গ্রীষ্ম এবং শরতে প্রজনন করে। শীতকালীন প্রজাতির প্রজনন কুরোশিও স্রোতের সাথে সম্পর্কিত। পূর্ব চীন সাগরে জানুয়ারী থেকে এপ্রিল মাস অবধি প্রজননের পরে, মাছের লার্ভাগুলি উত্তর দিকে কুরোশিও স্রোতের সাথে ভ্রমণ করে। এগুলি উপকূলের অভিমুখে গমন করে এবং এবং গ্রীষ্মের সময় হনশু এবং হোক্কাইডোর দ্বীপের মধ্যে বাধাপ্রাপ্ত হয়। গ্রীষ্মকালীন প্রজনন পূর্ব চীন সমুদ্রের অন্য একটি অঞ্চলে হয়, যেখান থেকে লার্ভাগুলি জাপানের দ্বীপপুঞ্জ এবং মূল ভূখণ্ডের মধ্য দিয়ে উত্তর দিকে প্রবাহিত সুসীমা স্রোতে প্রবেশ করে। এরপরে, স্রোতটি একটি দক্ষিণমুখী শীতল উপকূলীয় স্রোত যা লিমেন স্রোত নামে পরিচিত তার সাথে মিলিত হয় এবং উভয়ের মধ্যে সীমানা বরাবর গ্রীষ্মকালীন প্রজননের মাধ্যমে জলজ জীবগুলি ভেসে যায়।[১৪] এইভাবেই পশ্চিম সীমান্ত স্রোতের মাধ্যমে দ্রুত পরিবাহিত হয়ে জলজ জীবের অণ্ড ও লার্ভা শীতের সময়ও উষ্ণ জলস্রোতের সাহাজ্যে বংশ বিস্তার করে এবং এই স্রতের সাহাজ্যেই প্রাপ্তবয়স্ক জলজ জীবেরা প্রজননের পর নুন্যতম পরিশ্রম উত্তরমুখে এক নতুন বাসস্থানের সন্ধানে যায় যেখানে পর্যাপ্ত পরিমান খাদ্য বর্তমান।[১৪] গবেষণায় দেখা গেছে যে জাপানের বার্ষিক মৎস্য শিকার ১৯৮০ এর দশকের শেষের দিক থেকে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর কারণ হল সুশিমা প্রণালী এবং গোটো দ্বীপপুঞ্জের নিকটবর্তী অঞ্চলের শরত এবং শীতকালীন প্রজননক্ষেত্রের আবহাওয়ার পরিবর্তন।[১৯] এছাড়াও, পূর্ব চীন সাগরের মহাদেশীয় বালুচর এবং তার ঢালের উপরে শীতের প্রজনন ক্ষেত্রগুলি প্রসারিত হচ্ছে।[১৪]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানছয় দফা আন্দোলন২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরশেখ মুজিবুর রহমানকাজী নজরুল ইসলাম২০২৪ কোপা আমেরিকাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধবাংলাদেশকোকা-কোলাব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দলভারতের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকাআর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪নরেন্দ্র মোদীদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিক্লিওপেট্রামহাত্মা গান্ধীআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপআবহাওয়াসুন্দরবনবাংলা ভাষা আন্দোলনএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)ভারতসাইবার অপরাধঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরপ্রতিমন্ত্রীবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাপহেলা বৈশাখমৌলিক পদার্থের তালিকাবায়ুদূষণমিয়া খলিফাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনকেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদইন্দিরা গান্ধীফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংবাংলা ভাষাজাতিসংঘ