রামধনু পতাকা (এলজিবিটি আন্দোলন)

এলজিবিটিকিউ আন্দোলনের প্রতীক

রামধনু পতাকা (ইংরেজি: rainbow flag) হল নারী-সমকামী, পুরুষ-সমকামী, উভকামীরূপান্তরকামী (এলজিবিটি) আত্মাভিমান (প্রাইড) ও এলজিবিটি সামাজিক আন্দোলনগুলির একটি প্রতীক। এই পতাকাকে সচরাচর পুরুষ-সমকামী আত্মাভিমান পতাকা (ইংরেজি: gay pride flag) ও এলজিবিটি আত্মাভিমান পতাকা (ইংরেজি: LGBT pride flag) বলা হয়। এই পতাকার রংগুলি এলজিবিটি সমাজের বৈচিত্র্যকে প্রতিফলিত করে। এলজিবিটিকিউ+ অধিকার পদযাত্রাগুলিতে প্রায়শই এই পতাকাটি পুরুষ-সমকামী আত্মাভিমানের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। রামধনু পতাকার উৎসস্থল নর্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়া হলেও, এখন এটি সারা বিশ্বেই ব্যবহৃত হয়।

১৯৭০-এর দশক থেকে রামধনু পতাকা বা রেইনবো ফ্ল্যাগ হল নারী-সমকামী, পুরুষ-সমকামী, উভকামীরূপান্তরকামী (এলজিবিটি) গৌরব (প্রাইড) ও এলজিবিটি সামাজিক আন্দোলনগুলির প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

১৯৭৮ সালে সান ফ্রান্সিসকোর চিত্রশিল্পী গিলবার্ট বেকার রামধনু পতাকার নকশা প্রস্তুত করেছিলেন। পরে এই পতাকার নকশায় কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়। কোন বুনন কাপড় সহজে পাওয়া যায়, সেই অনুসারেই এই পতাকা থেকে প্রথমে রং বাদ দিয়ে এবং পরে রং আবার যোগ করে নকশা পালটানো হয়েছিল।[১][২] ২০০৮ সালের নকশা অনুসারে, রামধনু পতাকার সবচেয়ে বেশি পরিচিত নকশাটিতে লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, নীল ও বেগনি রঙের ছ’টি ডোরা-কাটা দাগ আছে। পতাকাটিকে সাধারণত আনুভূমিক অবস্থায় ওড়ানো হয়। লাল দাগটি উপরে থাকে, যাতে এটিকে প্রাকৃতিক রামধনুর মতো দেখায়।

ইতিহাস সম্পাদনা


১৯৭৮ সালে গিলবার্ট বেকার কৃত নকশায় আটটি ডোরা-কাটা দাগবিশিষ্ট মূল রামধনু পতাকা


বুনন কাপড় না পাওয়া যাওয়ায় হট পিঙ্ক রংটি বাদ দিয়ে এই রামধনু পতাকাটির নকশা প্রস্তুত করা
(১৯৭৮–৭৯)


১৯৭৯ সালের পর থেকে জনপ্রিয় ছয়-রঙা রামধনু পতাকা। বেগনি নীল ও আসমানি রঙের পরিবর্তে গাঢ় নীল রং যুক্ত করা হয়।

গিলবার্ট বেকারের জন্ম ১৯৫১ সালে। তিনি ছিলেন এক ঘোষিত পুরুষ-সমকামী আন্দোলনকারী। তাঁর ছেলেবেলা কেটেছিল কানসাসের একটি ছোটো শহরে। ১৯৭০ সালে তিনি দুই বছরের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। সম্মানজনকভাবে সেখান থেকে অবসর নেওয়ার পর গিলবার্ট নিজেই সেলাইয়ের কাজ শেখেন। ১৯৭৪ সালে বেকারের সঙ্গে হার্ভে মিল্ক নামে এক প্রভাবশালী পুরুষ-সমকামী নেতার সাক্ষাৎ হয়। মিল্ক তিন বছর পর বেকারকে নির্দেশ দেন পুরুষ-সমকামী সম্প্রদায়ের জন্য একটি আত্মাভিমানের প্রতীক সৃষ্টি করার জন্য।[৩] ১৯৭৮ সালের ২৫ জুন সান ফ্রান্সিসকোয় গে ফ্রিডম ডে প্যারেডে মূল পুরুষ-সমকামী আত্মাভিমান পতাকাটি উত্তোলন করা হয়েছিল। বলা হয়ে থাকে যে, বেকার হয়তো জুডি গারল্যান্ডের (তিনি ছিলেন অন্যতম প্রথম পুরুষ-সমকামী আইকন) "ওভার দ্য রেইনবো" গানটি এবং গারল্যান্ডের মৃত্যুর কয়েক বছর সংঘটিত স্টোনওয়াল দাঙ্গার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।[৪][৫] রামধনু পতাকার উৎস সম্পর্কে আরও একটি মত আছে। ১৯৬০-এর দশকে কলেজ প্রাঙ্গনগুলিতে কিছু মানুষ ফ্ল্যাগ অফ দ্য রেসেস (যা ফ্ল্যাগ অফ দ্য হিউম্যান রেস নামেও পরিচিত ছিল) বহন করে বিশ্বশান্তির বার্তা প্রচার করতেন। এই পতাকাটিতে পাঁচটি ডোরা-কাটা দাগ ছিল। উপর থেকে নিচ পর্যন্ত সেই রংগুলি ছিল লাল, সাদা, বাদামি, হলুদ ও কালো[৬] বলা হয়, এই পতাকাটির থেকেই গিলবার্ট বেকার রামধনু পতাকার ধারণাটি পেয়েছিলেন।[৭] তিনি সেই সময়কার হিপি আন্দোলন থেকে এটি ধার করেন। [৮] এটির উপর পুরুষ-সমকামী আন্দোলনের পথপ্রদর্শক আলেন গিনসবার্গের বিরাট প্রভাব ছিল। মূল পতাকাটিতে আটটি ডোরা-কাটা দাগ ছিল। বেকার প্রত্যেকটি রঙের এক-একটি নির্দিষ্ট অর্থ করেছিলেন:

রং:অর্থ
হট পিঙ্ক:যৌনতা
লাল:জীবন
কমলা:আরোগ্য
হলুদ:সূর্যালোক
সবুজ:প্রকৃতি
আসমানি নীল:জাদু/শিল্প
বেগনি নীল/নীল:শান্তভাব/একতা
বেগনি:উদ্দীপনা

তিরিশ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রথম প্যারেডের জন্য দু’টি পতাকা রং দিয়ে হাতে ছুপিয়ে সেলাই করে দেন। [৯]

১৯৭৮ সালের ২৭ নভেম্বর ঘোষিত পুরুষ-সমকামী সান ফ্রান্সিসকো সিটি সুপারভাইজার হার্ভে মিল্ক নিহত হওয়ার পর রামধনু পতাকার চাহিদা বেড়ে যায়। চাহিদার জোগান দেওয়ার জন্য প্যারামাউন্ট ফ্ল্যাগ কোম্পানি একটি বিশেষ নকশার রামধনু পতাকা বিক্রি করতে শুরু করে। এই পতাকায় লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, আসমানি নীল, নীল ও বেগনি রঙের সংগৃহীত রামধনু বুনন কাপড়ের সাতটি ডোরা-কাটা দাগ ব্যবহৃত হয়েছিল। বেকারের পতাকার এই নকশাটি পছন্দ হয়নি। তিনি নিজেও হট পিঙ্ক রংটি বুনন কাপড় না পাওয়ায় বর্জন করেন। অন্যদিকে সান ফ্রান্সিসকো-ভিত্তিক প্যারামাউন্ট ফ্ল্যাগ কোম্পানি পোক ও পোস্টের দক্ষিণপশ্চিম কোণে অবস্থিত নিজস্ব খুচরো ভাণ্ডার থেকে রেইনবো গার্লস পতাকার অতিরিক্ত মজুত দ্রব্য বিক্রি করতে শুরু করে। এই ভাণ্ডারেরই কর্মচারী ছিলেন বেকার।[১০]

১৯৭৯ সালে পতাকার নকশায় আবার পরিবর্তন আনা হয়। সান ফ্রান্সিসকোর মার্কেট স্ট্রিটের বাতিস্তম্ভ থেকে উল্লম্ব ভাবে এই পতাকাটি ঝোলানোর সময় পতাকার কেন্দ্রীয় রংটি বাতিস্তম্ভের রঙের দ্বারা আবৃত হয়ে পড়ে। এটি সংশোধনের একমাত্র উপায় ছিল একটি সম-সংখ্যক ডোরা-কাটা দাগে পতাকার নকশা পরিবর্তন। তাই আসমানি নীল রংটি বাদ দেওয়া হয়। এর ফলে পতাকার ডোরা-কাটা দাগগুলির নকশাটি দাঁড়ায় এই রকম — লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, নীল ও বেগনি।[১০]

১৯৮৯ সালে জন স্টাউট ক্যালইফোর্নিয়ায় তাঁর ওয়েস্ট হলিউড অ্যাপার্টমেন্টের বারান্দা থেকে রামধনু পতাকা প্রদর্শিত করতে চাইলে তাঁর বাড়িওয়ালারা তাঁকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। স্টাউট তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেন এবং সেই মামলায় জয় লাভ করেন। এর পরই সারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রামধনু পতাকা জনতার দৃষ্টি আকর্ষণ করে।[১১]

এক মাইল-দীর্ঘ পতাকা সম্পাদনা

১৯৯৪ সালে স্টোনওয়াল দাঙ্গার ২৫তম বার্ষিকীতে পতাকার স্রষ্টা বেকারকে বিশ্বের বৃহত্তম রামধনু পতাকাটি সৃষ্টি করতে বলা হয়।[১২] পরিকল্পনা করতে কয়েক মাস সময় লাগে। একদল স্বেচ্ছাসেবক প্রত্যেকটি কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার দায়িত্ব নেন। পতাকাটিতে মূল ছয়টি রং ব্যবহার করা হয় এবং এটির প্রস্থ দাঁড়ায় তিরিশ ফুট। স্টোনওয়াল বার্ষিকী অনুষ্ঠান একবার শেষ হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় বার্ষিকী অনুষ্ঠান পালনের অর্থ সংগ্রহের জন্য পতাকাটির এক-ফুট করে অংশ এক-একজন স্পনসরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে পতাকার অতিরিক্ত বড়ো অংশগুলি সমকামী অধিকার আন্দোলনকর্মীদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাঁরা সারা বিশ্বে প্রাইড প্যারেডএলজিবিটি পদযাত্রায় সেগুলি ব্যবহার করতে থাকেন।[১২] গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুসারে এটিই বিশ্বের বৃহত্তম পতাকা।[১৩]

২০০৩ সালে রামধনু পতাকার ২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বেকারকে আবার একটি বড়ো আকারের পতাকা তৈরি করতে বলা হয়। প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয় "২৫রেইনবো সি টু সি"। এবারও বেকার একদল স্বেচ্ছাসেবকের সাহায্য নিয়ে পতাকাটি তৈরি করেন। তবে এই পতাকায় পতাকার মূল আটটি রঙ ব্যবহার করা হয়। পতাকাটির দৈর্ঘ্য হয় সওয়া এক মাইল (২ কিমি)। এটি ফ্লোরিডার কি ওয়েস্টে আটলান্টিক মহাসাগর থেকে গালফ কোস্ট সাগর পর্যন্ত প্রসারিত ছিল। এই পতাকাটিকেও পরে কেটে এর অংশগুলি সারা বিশ্বের একশোরওটির বেশি শহরে পাঠানো হয়।

২০০০-এর দশক সম্পাদনা

২০০০ সালে ইউনিভার্সিটি অফ হাওয়াই অ্যাট মানোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস দলগুলির নাম "রেইনবো ওয়ারিয়র্স" থেকে পাল্টে "ওয়ারিয়র্স" রাখে এবং দলের লোগো থেকে একটি রামধনুর ছবিকে মুছে সেটির নকশায় পরিবর্তন আনে। প্রথমদিকে অ্যাথলেটিক ডিরেক্টর হিউজ ইয়োশিডা বলেছিলেন যে, স্কুলের অ্যাথলেটিক কর্মসূচি থেকে সমকামিতার দূরত্ব তৈরি করার জন্য এই পরিবর্তন করা হয়েছে। তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে ইয়োশিডা বলেন যে, এই পরিবর্তন শুধুমাত্র ব্র্যান্ড-সংক্রান্ত বিভ্রান্তি দূর করার জন্য করা হয়েছে।[১৪] এরপর স্কুল প্রত্যেকটি দলকে নিজস্ব নাম বেছে নেওয়ার অনুমতি দেয়। এরপর দলগুলি "রেইনবো ওয়ারিয়র্স", "ওয়ারিয়র্স", "রেইনবোজ" ও "রেইনবো ওয়াহিন" নামগুলি বেছে নেয়। ২০১৩ সালের মে মাসে এই নিয়ম আবার পাল্টানো হয়। তৎকালীন অ্যাথলেটিক ডিরেক্টর বেন জে ফেব্রুয়ারি মাসে আগের সিদ্ধান্ত বাতিল করেন এবং পুরুষদের সবক’টি অ্যাথলেটিক দলকে মিশ্র রেইনবো ওয়ারিয়র্স নামটি বর্জ করে শুধুমাত্র ওয়ারিয়র্স নাম রাখতে বাধ্য করেন।[১৫]

২০০৪ সালের জুন মাসে এলজিবিটি অধিকার কর্মীরা অস্ট্রেলিয়ার জনমানবহীন কোরাল সি আইল্যান্ডস টেরিটরিতে উপস্থিত হন এবং সেখানে রামধনু পতাকা উত্তোলন করেন। তাঁরা সেই অঞ্চলকে অস্ট্রেলিয়া থেকে স্বাধীন বলে ঘোষণা করেন এবং এটির নাম রাখেন গে অ্যান্ড লেসবিয়ান কিংডম অফ দ্য কোরাল সি আইল্যান্ডস। এই রাজ্যের সরকারি পতাকা হল রামধনু পতাকা।[১৬]

২০১৫ সালের জুন মাসে মিউজিয়াম অফ মডার্ন আর্ট জাদুঘরের নকশা সংগ্রহের অংশ হিসেবে রামধনু পতাকা প্রতীকটি সংগ্রহ করে।[১৭][১৮][১৯]

২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উইল রিচার্ডস ও ড্যানিয়েল বাটসন নামে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া প্রদেশের অন্তর্গত গিলং-এর শিল্পকলার দুই ছাত্র পোটেটো মেসেঞ্জার তৈরি করেন এবং ডাক মারফত রামধনু পতাকার আদলে রং করে ও সাজিয়ে ১,০০০টি আলু ক্যানবেরার পার্লামেন্ট হাউসে প্রেরণ করে। এইভাবেই তাঁরা অস্ট্রেলিয়ায় বিবাহ সমতার প্রতিবাদ জানান।[২০] এই কাজের জন্য সামগ্রিকভাবে খরচ হয়েছিল ১,৫০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার[২১]

রূপান্তর সম্পাদনা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পতাকার তারকা-খচিত অংশটি যুক্ত করে সৃষ্ট এলজিবিটি আত্মাভিমান পতাকা।

রামধনু পতাকার অনেকগুলি রূপান্তর ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর মধ্যে সুপরিচিত একটি রূপান্তরে পতাকার মধ্যস্থলে সাদা রঙে গ্রিক লাম্বডা (ছোটো হাতের) অক্ষরটি দেখা যায়। আরেকটি সুপরিচিত রূপান্তরে পতাকার উপরের বাঁ দিকের কোণে একটি গোলাপি ত্রিভূজ বা কালো ত্রিভূজ দেখা যায়। অন্যান্য রংও ব্যবহৃত হয়েছে। যে রকম, যাঁরা এইডস রোগে প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁর প্রতীক হিসেবে একটি কালো ডোরা-কাটা দাগ যুক্ত করা হয়। জাতীয় পতাকা বা আঞ্চলিক পতাকার পুরুষ-সমকামী সংস্করণ হিসেবেও প্রায়শই রামধনু রংগুলি ব্যবহৃত হয়। যেমন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পতাকা থেকে লাল ও সাদা ডোরা-কাটা দাগগুলি বাদ দিয়ে সেখানে রামধনু রংগুলি ব্যবহার করা হয়। ২০০৭ সালে টেক্সাসের হিউস্টনের আত্মাভিমান পদযাত্রায় প্রাইড ফ্যামিলি ফ্ল্যাগ প্রবর্তিত হয়।

এইডস মহামারীর প্রথম দিকের বছরগুলিতে এইডস আন্দোলনকর্মীরা একটি "ভিক্ট্রি ওভার এইডস" পতাকার নকশা প্রস্তুত করেন। এই পতাকার রামধনু পতাকার সাধারণ ছ’টি ডোরা-কাটা দাগের সঙ্গে নিচে একটি কালো ডোরা-কাটা অংশও যুক্ত করা হয়েছে। এইডস-সংক্রান্ত রোগে মৃত্যুপথযাত্রী লিওনার্ড ম্যাটলোভিচ বলেছিলেন যে, এইডস রোগের আরোগ্যের উপায় আবিষ্কৃত হওয়ার পর পতাকার নিচের কালো অংশটি যেন বাদ দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়।[৯]

অন্যান্য দেশের এলজিবিটি সমাজও রামধনু পতাকা গ্রহণ করেছে। ২০১০ সালে কেপ টাউনে রামধনু পতাকা ও দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় পতাকা মিশিয়ে একটি দক্ষিণ আফ্রিকার পুরুষ-সমকামী আত্মাভিমান পতাকা গৃহীত হয়। পতাকাটির নকশাকারী ইউজিন ব্রোকম্যান বলেছিলেন যে, "আমি সত্যিই বিশ্বাস করি আমরা (এলজিবিটি সমাজ) এই বিভ্রান্তিকে আমাদের রামধনু জাতির সঙ্গে এক করে দেব এবং এই পতাকাটি শুধুই তার প্রতীক।"[২২]

এলজিবিটি আত্মাভিমানের প্রতীক হিসেবে রামধনু রং সম্পাদনা

গয়না, জামাকাপড় ও অন্যান্য অনেক ব্যক্তিগত দ্রব্যসামগ্রীর উপর রামধনু পতাকার বহুল প্রয়োগ দেখা যায়। রামধনু পতাকার রংগুলি নিয়মিত এলজিবিটি পরিচিতি ও সংহতির প্রদর্শক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এলজিবিটি আত্মাভিমান ও পরিচিতি প্রতীক হিসেবে রামধনু রংগুলি এতটাই বিশ্বজনীনতা লাভ করেছে যে, এটি অন্য সমস্ত এলজিবিটি প্রতীকগুলিকে (যেমন গ্রিক লাম্বডা অক্ষর ও গোপালি ত্রিভূজ) প্রতিস্থাপিত করে দিয়েছে। গয়নার ক্ষেত্রে একটি সাধারণ সামগ্র হল প্রাইড নেকলেস বা ফ্রিডম রিংস্‌। এগুলিতে ছয় রঙের ছ’টি আংটি একটি হারে গাঁথা থাকে।[২৩][২৪] এছাড়া রামধনু-রঙা চাবির রিং ও মোমবাতিও পাওয়া যায়। ১৯৯৯ সালে মন্ট্রিল শহরের বিউড্রাই মেট্রো স্টেশনটি এটির নকশায় রামধনু রঙের উপাদান দিয়ে পুনর্নির্মাণ করা হয়। এই স্টেশনটি হল শহরের গে ভিলেজের মেট্রো স্টেশন।[২৫][২৬]

উদ্দীপনা দিবস সম্পাদনা

২০১০ সালের অক্টোবর মাসের গোড়ার দিকে কানাডিয়ান কিশোর ব্রিট্যানি ম্যাকমিলান উদ্দীপনা দিবস বা স্পিরিট ডে নামে এক নতুন অনুষ্ঠান পালনের কথা প্রচার করেন। প্রথম দিকে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হত ২০ অক্টোবর। কিন্তু এখন এটি পালিত হয় ১৫ অক্টোবর।[২৭] যে সমস্ত এলজিবিটি যুবক-যুবতীরা হেনস্থার শিকার হন, তাঁদের প্রতি সমর্থন প্রদর্শনের জন এই দিন লোকে বেগনি-লাল রং পরিধান করেন।[২৮] উদ্দীপনা দিবসের নামটি এসেছে রামধনু পতাকার বেগনি-লাল ডোরা-কাটা দাগটি থেকে। এই দাগটিকে পতাকার স্রষ্টা গিলবার্ট বেকার "উদ্দীপনার প্রতীক" বলে চিহ্নিত ছিলেন।

আরও দেখুন সম্পাদনা

টীকা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানছয় দফা আন্দোলনভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকাজী নজরুল ইসলামভারতের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকাবাংলাদেশশেখ মুজিবুর রহমানভারতের প্রধানমন্ত্রীনরেন্দ্র মোদীক্লিওপেট্রাভারতীয় জনতা পার্টিবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধলোকসভাএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাইন্দিরা গান্ধীআবুল হাসান মাহমুদ আলীমহাত্মা গান্ধীআবহাওয়ারাহুল গান্ধীভারতভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলসমূহমমতা বন্দ্যোপাধ্যায়বিশ্ব পরিবেশ দিবসকুরবানীইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা ভাষা আন্দোলনভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসমিয়া খলিফাভূমি পরিমাপপশ্চিমবঙ্গবাংলা বাগধারার তালিকা২০২৪ কোপা আমেরিকাবেনজীর আহমেদরিশতা লাবণী সীমানামুহাম্মাদ