পানি বিশুদ্ধকরণ

(পানি পরিশোধন থেকে পুনর্নির্দেশিত)

পানি বিশুদ্ধকরণ বা জল বিশুদ্ধকরণ হল এমন একটি প্রক্রিয়া, যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জল বা পানি থেকে অবাঞ্চিত রাসানিক পদার্থ, জৈব সংক্রামক পদার্থ ও ক্ষতিকর গ্যাসীয় পদার্থ দূর করা হয়। এই প্রক্রিয়ার মূল উদ্দেশ্য হল বিভিন্ন কাজের জন্য বিশুদ্ধ জল বা পানি উৎপাদন করা। অধিকাংশ পানিকে মানুষের ব্যবহারের (পান করার পানি) জন্য বিশুদ্ধ করতে হয়, কিন্তু পানি বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়াটি মেডিকেল, ফার্মাকোলজিক্যাল, রাসায়নিক এবং ইন্ড্রাস্ট্রিতে ব্যবহারসহ আরো অনেক ধরনের উদ্দেশ্যের জন্য করা পরিকল্পনা করা হয়ে থাকে। জল বা পানি বিশুদ্ধকরণের কয়েক ধরনের প্রক্রিয়া রয়েছে। এগুলো মধ্যে হল শারীরিক প্রক্রিয়া, জৈব প্রক্রিয়া, রাসায়নিক প্রক্রিয়া ইত্যাদি। শারীরিক প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে পরিস্রাবণ, অধঃক্ষেপণ এবং পাতন। জৈব প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে ধীর বালি ফিল্টার বা জৈবিকভাবে সক্রিয় কার্বন। রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে ফ্লুকিউলেশন এবং ক্লোরিনেশন এবং অতিবেগুনী রশ্মির মত তড়িৎচুম্বকীয় রশ্মির ব্যবহার।

জল বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট

জল বা পানির বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পানিতে থাকা পরজীবী, ব্যাকটেরিয়া, শেওলা, ভাইরাস, ছত্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের বস্তুকণার ঘনত্ব কমানো যেতে পারে, সাথে সাথে বৃষ্টির কারণে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে বয়ে এসে জলে মিশে যাওয়া বস্তুকণার পরিমাণও অনেকাংশে কমানো যায়।

খাবার জলের গুণমানের মানদন্ড সাধারণত সরকার কর্তৃক বা আন্তর্জাতিক মানদন্ড দ্বারা নির্ধারিত করা হয়ে থাকে। পানির ব্যবহারের উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করে পানিতে দূষিত পদার্থের ঘনত্বের মান সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ কত হবে তা নির্ধারিত হয়ে থাকে।জল বা পানির গুণাগুণ যথাযথ কিনা তা দৃষ্টিনির্ভর পরীক্ষণের মাধ্যমে নির্ধারণ করা যায় না। অজ্ঞাত উৎসের পানিকে ফুটিয়ে বা বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত সাধারণ ফিল্টারের সাহায্যে ঐ পানিতে দ্রবীভূত সম্ভাব্য সকল দূষিত পদার্থকে পৃথকীকরণের মধ্য সাধারণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পানিকে বিশুদ্ধ করা যায় না। এমনকি প্রাকৃতিক বসন্ত জল কে– যা ঊনবিংশ শতাব্দীতে সকল ব্যবহারিক কাজে ব্যবহারের উপযোগী হিসেবে বিবেচনা করা হত – বর্তমানে পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে, যদি দরকার হয়, ব্যবহার করার জন্য উপদেশ দেয়া হয়ে থাকে। রাসায়নিক এবং মাইক্রোবায়োলজিক্যাল বিশ্লেষণ, ‍যদিও ব্যয়বহুল, হল এমন দুইটি পরীক্ষা, যে পরীক্ষাগুলো হতে প্রাপ্ত প্রয়োজনীয় তথ্যই নির্ধারণ করে কোন ধরনের বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে হবে।

২০০৭ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইছও) একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ১.১ বিলিয়ন লোক নিরাপদ পানির সরবারহ হতে বঞ্চিত হয়, প্রতি বছর ৪ বিলিয়ন লোক ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয় যার ৮৮% লোক অনিরাপদ জল এবং অপর্যাপ্ত এবং অস্বাস্থ্যকর শৌচাগার ব্যবহারের জন্য ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়, এবং এই ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর প্রায় ১.৮ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আনুমানিক হিসেব করে দেখেছে যে নিরাপদ পানি সরবরাহের মত পরিবেশগত পরিবর্তনের মাধ্যমে এইসব ডায়রিয়া রোগীর প্রায় ৯৪% দূর করা যেতে পারে। ক্লোরিনেশন, ফিল্টারীকরণ এবং সৌর-নির্বীজন এর মত সাধারণ কৌশলগুলো আত্মস্থ করলে এবং পানিকে একটি নিরাপধ পাত্রে সংগ্রহ করার মাধ্যমে প্রতি বছর লাখো মানুষের জীবন রক্ষা করা যেতে পারে। পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যুর হার কমানোর মাধ্যমে জনস্বাস্থের উন্নতির করাটাই হল উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বিরাট একটি লক্ষ।

পরিশোধন

সম্পাদনা

উদ্দেশ্য

সম্পাদনা

জল বা পানি পরিশোধনের মূল উদ্দেশ্য হল পানিতে দ্রবীভূত অবাঞ্ছিত উপাদান দূরীকরণের মাধ্যমে পানিকে খাওয়ার উপযোগী বা শিল্প কারখানা এবং মেডিকেলের বিভিন্ন কাজের ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা। পানি থেকে সংক্রামক পপদার্থগুলো যেমন- মাইক্রো অরগানিজম, বিভিন্ন ধরনের জৈব ও অজৈব পদার্থ দূরীকরণের অনেক ধরনের প্রযুক্তি রয়েছে । কোন ধরনের প্রযুক্তি বব্যবহার করা হবে সেটা নির্ভরর করে কোন ধরনের পানি ব্যবহার করা হবে, কোথাায় ব্যবহার করা হবে এবং কি পরিমাণ খরচ হবে তার উপর।

এসিডিকও নয় ক্ষারীয়ও নয়)। সমুদ্রের পানির pH এর মান হল ৭.৫ থেকে ৮.৪ পর্যন্ত। নিষ্কাশন অববাহিকা বা জলস্তরের অবস্থান এবং দ্রবীভূত সংক্রামকের (এসিড বৃষ্টি) প্রভাবের উপর ভিত্তি করে মিঠা পানির pH বিভিন্ন হতে পারে। যদি পানি এসিডিক বা অম্লীয় হয় (pH এর মান ৭ এর কম), পানি বিশুদ্ধকরণের প্রক্রিয়ার সময় পানির সাথে চুন, লেবু, সোডা ছাই, বা সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড মিশানোর মাধ্যমে পানির pH বাড়ানো যায়। চুন মিশানোর মাধ্যমে পানিতে ক্যালসিয়াম আয়নের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়, ফলে পনির হার্ডনেস বৃদ্ধি পায়। অতি উচ্চমাত্রার অম্লীয় পানির ক্ষেত্রে, পানিত দ্রবীভূত কার্বন ডাই অক্সাইড দূরীকরণই হচ্ছে পানির pH বৃদ্ধির অন্যতম উপায়। পানিকে ক্ষারীয় করার মাধ্যমে পানির ঘনীভবন প্রক্রিয়া দ্রুত হয় এবং পাইপ ফিটিংসের সময় সীসার পাইপ ও সীসার জালাইয়ের সময় সীসার গলে যাওয়ার ঝুকি কমে যায়। পর্যাপ্ত ক্ষারতা পানিতে লোহার পাইপের ক্ষয় হয়ে যাওয়ার ঝুকিও কমিয়ে দেয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পানির pH কমানোর জন্য এসিডও (কার্বনিক এসিড, হাইড্রোক্লোরিক এসিড বা সালফিউরিক এসিড) মিশাতে হয়। প্লাম্বিং সিস্টেমে ক্ষারীয় পানির (pH এর মান ৭ এর বেশি) কারণে সীসা বা লোহার ক্ষয় হবে তা জরুরী নয়।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
🔥 Top keywords: চন্দ্রবোড়া২০২৪ কোপা আমেরিকাপ্রধান পাতাতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানআন্তর্জাতিক যোগ দিবসবাংলাদেশের সাপের তালিকা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপনালন্দাএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)কোপা আমেরিকারবীন্দ্রনাথ ঠাকুরনালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলবাংলাদেশশঙ্খচূড়ক্লিওপেট্রাশঙ্খিনী২১ জুনঅম্বুবাচীমিয়া খলিফা২০২৪ কোপা আমেরিকা গ্রুপ এরাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বাংলাদেশ আওয়ামী লীগফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং৬৯ (যৌনাসন)কাজী নজরুল ইসলামবিশ্ব সংগীত দিবসডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনপাতি কাল কেউটেশাকিব খানভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানউয়েফা ইউরো ২০২৪বিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদকেউটে সাপআবহাওয়া